ক্ষমতার অলিন্দে হার্মাদদের অনুপ্রবেশ বন্ধ করুন
রাজ্য পুলিশের ডিজি ও মুখ্যমন্ত্রীর চিঠির জবাবে ফের একবার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তুমুল আক্রমণ শানালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। সোমবার বিকেলে রাজভবনে সেই সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী থেকে রাজ্য পুলিশের ডিজি, বাদ যাননি কেউই। সঙ্গে রাজ্যপালের চাঞ্চল্যকর দাবি, ‘ইলেক্ট্রনিক নজরদারি চালাচ্ছে রাজ্য সরকার।’
এদিন রাজ্যপাল বলেন, পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত। মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্যপালের অনুরোধ, ক্ষমতার অলিন্দে হার্মাদদের ঢোকা বন্ধ করুন। রাজ্যের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বলেন পশ্চিমবঙ্গ সন্ত্রাসবাদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে।
একই সঙ্গে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা বলে কিছু অবশিষ্ট নেই বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, পশ্চিমবঙ্গে ইলেক্ট্রনিক নজরদারি চলছে বহু মানুষের ওপর। ন্যায্য কথা বললেই তার ওপর নজরদারি শুরু করছে সরকার।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেছেন তিনি। বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালের ভূমিকা বুঝতে ভুল করেছেন। তিনি আমাকে লিখেছেন, কোনও অভিযোগ থাকলে আমাকে জানান, প্রকাশ্যে মুখ খুলবেন না। আমি তার সাধ্যমতো সমাধানের চেষ্টা করব। কিন্তু কোনও সমস্যার সমাধান না করতে পারলে কিছু করার নেই।’ এর পরই সুর চড়িয়ে ধনখড় বলেন, ‘রাজ্যপাল রাবার স্ট্যাম্প নন।’
একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর শপথবাক্য মনে করান রাজ্যপাল। মনে করান সংবিধানের একাধিক অনুচ্ছেদে লিখিত নির্দেশিকা। বলেন, তার কোনওটাই মানছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন নাম করে রাজ্য পুলিশের ডিজিকে ধমক দেন রাজ্যপাল। বলেন, রাজ্য সরকার পুলিশের ঘাড়ে ভর করে চলছে। আর নির্লজ্জের মতো সরকারের তোষামদ করে চলেছেন বীরেন্দ্র। ডিজি যে চিঠি দিয়েছেন, তাতে তিনি হতবাক বলে জানিয়েছেন রাজ্যপাল।
রাজ্যপালের সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তাঁর দাবি, সংবিধানের বিকৃত ব্যাখ্যা করছেন রাজ্যপাল। রাজ্যপাল আইনজীবী হিসাবে সফল নন বলেও কটাক্ষ করেন তিনি।
নজরদারি চালানোর অভিযোগে রাজ্যপালের পাশে দাঁড়িয়েছে বাম কংগ্রেস। তাদের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার দিন থেকেই বিরোধীদের ওপর নজরদারি শুরু হয়েছিল। এখন তা বাড়তে বাড়তে নিজের দলের লোকেদের ওপরেও শুরু হয়েছে। বাদ যাননি সরকারি আধিকারিকরাও।