বাংলার চিন্তা এখন করোনা মৃত্যু নিয়ে।
করোনা মোকাবিলায় সপ্তাহে দু দিন লকডাউনের পথেই আপাতত অবিচল থাকার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, সপ্তাহে দু দিন করে যেমন সম্পূর্ণ লকডাউন হচ্ছে, সে ভাবেই অন্তত পক্ষে ৩১ অগস্ট পর্যন্ত। আর দুদিন লকডাউন নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুললেও কিছুটা করে হলেও কমছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া তথ্য দেওয়া বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২১৩৪ জন। তবে, অত্যন্ত আশার খবর হল এই সময়ের মধ্যে সেরেও উঠেছেন ২১০৫ জন। ফলে রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যেখানে ৬২,৯৬৪, সেখানে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা মাত্র ১৯,৪৯৩। অর্থাৎ সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪২,০২২ জন। রিকভারি রেট ৬৬.৭৪%।
তবে, মৃত্যুর সংখ্যাতে রাশ টানা যাচ্ছে না। গত ২৪ ঘণ্টাতেও মারণ ভাইরাস কেড়ে নিয়েছে রাজ্যের আরও ৩৮ জন মানুষের প্রাণ। ফলে বাংলায় মোট করোনা-মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১,৪৪৯। এই বিষয়টাই ভাবাচ্ছে স্বাস্থ্য কর্তাদের।
রাজ্যের মধ্যে কলকাতা শহর এখনও আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যার নিরিখে শীর্ষেই রয়েছে। এখনও পর্যন্ত কলকাতায় ১৯ হাজার ৫৩১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৭৭৮ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১২ হাজার ৪৯২ জন। ৬ হাজার ৩৩৩ জনের চিকিৎসা চলছে। শুধু কলকাতাতেই করোনায় প্রাণ দিয়েছে ৭০৬ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ গিয়েছে ১০ জনের। এদিকে, আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যার নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে উত্তর ২৪ পরগনা। এই জেলায় এখনও পর্যন্ত ১৩ হাজার ৩৬৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৩০৬ জন। পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হগলিরও। হাওড়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭,০৭২ জন। প্রাণ হারিয়েছেন ১৮৪ জন। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আক্রান্ত ৪৭৩৮ জন মানুষ, মৃত্যু হয়েছে ৭৭ জনের। হুগলিতেও হুহু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৩,০৮৪ জন। মারা গিয়েছেন ৫৭ জন।
এদিকে দেশে সোমবার ৫ লক্ষ ২৮ হাজার নমুনা পরীক্ষা করা হয় বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে ১৪ লক্ষ ৮২ হাজার ৫০৩। মৃত্যু হয়েছে ৩৩ হাজার ৪৪৮। তবে, সুস্থ হয়েছেন ৯ লক্ষ ৫৩ হাজার ১৮৯। মন্ত্রকের দাবি, করোনায় মৃত্যুর হার এখনও ভারতেই সবচেয়ে কম— মাত্র ২.২৮ শতাংশ। দেশে সুস্থতার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪.২৩ শতাংশ।