মহাবিশ্বের রহস্যময় বিষয়ের উদ্ভাবনা, পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পেলেন ৩ গবেষক
মহাবিশ্বের অন্যতম রহস্যময় বিষয় নিয়ে গবেষণা করেছেন তাঁরা। সন্ধান পেয়েছেন নয়া এমন বিষয়ের, যা সেই রহস্যের উদঘাটনে নয়া দিগন্তের উন্মোচন করেছে। সেই ব্ল্যাক হোল সংক্রান্ত গবেষণার জন্য এবার পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পেলেন ব্রিটেনের রজার পেনরোজ, জার্মানির রেইনহার্ড গেঞ্জেল এবং আমেরিকার আন্দ্রেয়া ঘেজ।
মঙ্গলবার নোবেল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, নোবেলের একটি অংশ পাচ্ছেন ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক রজার পেনরোজ। অঙ্ক ব্যবহার করে ৮৯ বছরের বিজ্ঞানী প্রমাণ করেছেন যে আপেক্ষিকতাবাদের সাধারণ তত্ত্বের প্রত্যক্ষ পরিণতি হল ব্ল্যাক হোল। সোজা ভাষায় বলতে গেলে অ্যালবার্ট আইনস্টাইনেরর আপেক্ষিকতাবাদের সাধারণ তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে অঙ্কের মাধ্যমে পেনরোজ প্রমাণ করেছেন যে ব্ল্যাক হোল গঠন সম্ভব। ১৯৬৫ সালে সেই গবেষণার ব্যাখ্যা করেছিলেন পেনরোজ। এতদিনে সেই গবেষণার স্বীকৃতি পেলেন তিনি।
নোবেল কমিটির তরফে বলা হয়েছে, ‘আইনস্টাইন নিজে বিশ্বাস করতেন না যে ব্ল্যাক হোলের অস্তিত্ব আছে। তাদের মধ্যে যা প্রবেশ করে, তার সবকিছু ধরে ফেলতে পারে অত্যন্ত ভারী এই দানব। কিচ্ছু সেখান থেকে বেঁচে যেতে পারে না, আলোও নয়।’
নোবেলের অপর অংশটি পাচ্ছেন জার্মানির রেইনহার্ড গেঞ্জেল এবং আমেরিকার আন্দ্রেয়া ঘেজ। জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর এক্সট্রাটেরেস্টিয়াল ফিজিক্সের অধিকর্তা হলেন রেইনহার্ড গেঞ্জেল। ৬৮ বছরের বিজ্ঞানী আমেরিকায় বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়েও অধ্যাপনা করেন। আন্দ্রেয়া ঘেজের সঙ্গে যৌথভাবে একটি অদৃশ্য এবং অত্যন্ত ভারী বস্তুর সন্ধান পেয়েছেন গেঞ্জেল। যে বস্তুটি ছায়াপথের কেন্দ্রে নক্ষত্রদের কক্ষপথকে নিয়ন্ত্রণ করে। যাঁরা নব্বইয়ের দশক থেকে ছায়াপথের উপর নজর রেখেছিলেন। যেখানে অদ্ভূত কিছু হচ্ছিল।
আন্দ্রেয়া ঘেজ লস অ্যাঞ্জেলসে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা করেন। নোবেল প্রাপ্তির খবর শুনে তিনি বলেন, ‘ব্ল্যাক হোলের বিষয়টি বোঝা এতটাই কঠিন যে তা আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।’ ইতিহাসে চতুর্থ মহিলা হিসেবে পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছেন ৫৫ বছরের গবেষক। তাঁর আগে ১৯০৩ সালে মেরি কুরি, ১৯৬৩ সালে গোপার্ট মায়ের এবং ২০১৮ সালে ডোন্না স্ট্রিকল্যান্ড সেই স্বীকৃতি পেয়েছিলেন।
পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল কমিটির চেয়্যারম্যান ডেভিড জানিয়েছেন, ‘কমপ্যাক্ট’, ‘সুপারম্যাসিভ’ বস্তুর গবেষণার ক্ষেত্রে যুগান্তরকারী আবিষ্কার এটা। তবে সেই বিষয়গুলি নিয়ে এখনও অসংখ্য প্রশ্ন লুকিয়ে আছে। যা ভবিষ্যতে আরও গবেষণার ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের অনুপ্রাণিত করবে। আপাতত পুরস্কারমূল্যের এক কোটি সুইডিশ ক্রোনার (১.১ মিলিয়ন ডলারের মতো) তিন গবেষকের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে। ( সাংবাদ সংস্থা)