২৫ হাজার কোটি টাকার এমপি বিড়লা সাম্রাজ্য থেকে হর্ষবর্ধন লোধাকে অপসারণের নির্দেশ
এমপি বিড়লা( মাধব প্রসাদ বিড়লা) গ্রুপ অফ কোম্পানিসের ট্রাস্টি ও সোসাইটির পরিচালক ও অন্যান্য পদ থেকে হর্ষবর্ধন লোধাকে অপসারণের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।আদালতের দেওয়া এই রায় বর্ধিত বিড়লা পরিবারের একটা বড় জয় বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, মাধব প্রসাদ বিড়লার (এমপি বিড়লা) স্ত্রী প্রিয়ম্বদা বিড়লার করে যাওয়া একটি উইল নিয়ে এই আইনি লড়াই প্রায় ১৮ বছর ধরে চলেছে।
১৯৮২ সালে প্রিয়ম্বদা বিড়লা তাঁর চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট রাজেন্দ্র সিং লোধা ও তাঁর দ্বিতীয় পুত্র হর্ষবর্ধন লোধার নামে উইলটি করে রেখে গিয়েছিলেন। উইলে তিনি তাঁর সম্পত্তি এবং ২৫ হাজার কোটি টাকা মূল্যের এমপি বিড়লা সাম্রাজ্যের সবটাই রাজেন্দ্র সিং লোধাকে হস্তান্তরের কথা বলে গিয়েছিলেন।
একদিকে লোধা পরিবার ও অন্যদিকে বিড়লা পরিবার গত ১৮ বছর এই উইল এবং এমপি বিড়লা গ্রুপের বিড়লা কর্পোরেশন ও অন্যান্য কোম্পানির মালিকানা নিয়ে আইনি লড়াই লড়েছেন। অবশেষে হর্ষবর্ধন লোধাকে সিমেন্ট প্রস্তুতকারক বিড়লা কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান এবং বিন্ধ্যা টেলিলিঙ্কস লিমিটেড, বিড়লা কেবলস লিমিটেড, ইউনিভার্সাল কেবলস লিমিটেড–সহ বিড়লা গ্রুপের অন্যান্য কোম্পানির বোর্ডের পরিচালক পদ থেকে সরানো হবে।
চলতি বছরের মে মাসে কলকাতা হাইকোর্টের দুই বিচারকের বিভাগীয় বেঞ্চ উপরোক্ত কয়েকটি সংস্থায় হর্ষবর্ধন লোধাকে পরিচালক পদে পুনরায় নিয়োগের অনুমতি দিয়েছিল। বিড়লা পরিবার এই নিয়োগের ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানালেও মামলাটি ফের হাইকোর্টে চলে আসে। তার পরই এদিন এই রায় দেয় আদালতের বিশেষ প্রশাসন বোর্ড। ওই সংস্থাগুলিতে হর্ষবর্ধন লোধাকে পুনর্নিয়োগ তো করা যাবেই না, তার পাশাপাশি মুনাফার ভিত্তিতে তাঁকে কোনও পারিশ্রমিকও দেওয়া যাবে না।
এদিকে, বিড়লা পরিবারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আদালতের প্রশাসক কমিটি সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নিয়ে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, হর্ষবর্ধন লোধা এমপি বিড়লা গ্রুপ কোম্পানির কোনও পদে আর থাকতে পারবেন না। এমপি বিড়লায় ডিরেক্টর পদ বা বিড়লা গোষ্ঠীর সমস্ত ট্রাস্ট ও সোসাইটির কোনও পদেই তাঁর কোনও জায়গা থাকবে না। পাশাপাশি জানানো হয়েছে, আদালতের এই সিদ্ধান্তে লোধা পরিবার কোনওরকম হস্তক্ষেপও করতে পারবে না।
ওদিকে, লোধা গ্রুপের এক আইনজীবী কলকাতা হাইকোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেছেন, ‘বিন্ধ্যা টেলিলিঙ্কস লিমিটেড এবং বিড়লা কেবল লিমিটেডের পরিচালক পদে হর্ষবর্ধন লোধাকে পুনরায় নিয়োগের বিষয়ে বিচারপতি সহিদুল্লাহ মুন্সির রায় একেবারেই বৈধ বলে মনে হয় না।’ ফক্স অ্যান্ড মণ্ডল সংস্থার আইনজীবী ধনঞ্জয় মণ্ডল এ ব্যাপারে জানান, কলকাতা হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।