২৬ মে বাংলা এবং ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় প্রতি ঘণ্টায় হাওয়ার গতিবেগ ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার পর্যন্ত থাকতে পারে ।
আগামী ২৬ মে সন্ধ্যায় ইয়াস পশ্চিমবঙ্গ-সহ ওড়িশার উপকূলে আছড়ে পড়তে চলেছে বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর। ফলে শনিবার থেকেই প্রশাসনিক স্তরে কার্যত যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। নবান্নর পাশের প্রশাসনিক ভবন উপান্ন-তে কন্ট্রোল রুম তৈরি করা হয়েছে। এ দিন যাবতীয় প্রস্তুতি খতিয়ে দেখে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শনিবার রাতে পরপর তিনটি টুইট করেন মমতা। সমস্ত জেলাশাসক ও এসপিদের পাশাপাশি রাজ্য ও কেন্দ্রের শীর্ষ আধিকারিকদের পাশাপাশি বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গেও তিনি বৈঠক করেছেন বলে জানান। টুইটে মমতা লেখেন, “সাইক্লোন মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উপকূল এলাকাতে অগ্রিম পরিকল্পনা এবং স্থানান্তরের কাজ সেরে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।” যারা বিপজ্জনক জায়গায় রয়েছেন, তাঁদের দ্রুত ত্রাণশিবিরে নিয়ে আসার এবং পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করারও নির্দেশ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
যে সকল মৎসজীবীরা বর্তমানে মাঝসমুদ্রে রয়েছেন, তাঁদের অবিলম্বে ফিরে আসতে বলেছেন মমতা। সর্বক্ষণের জন্য কন্ট্রোল রুম তৈরি হয়েছে বলেও লেখেন তিনি। যে কোনও সাহায্যের জন্য জরুরি পরিস্থিতিতে সেই কন্ট্রোল রুমে ফোন করা যাবে। কন্ট্রোল রুমের দু’টি নম্বরও দিয়েছেন মমতা। নম্বর দুটি হল, ১০৭০ এবং ০৩৩-২২১৪৩৫২৬। আগে থেকেই ত্রাণ সামগ্রী জায়গা মতো পাঠিয়ে রাখা হয়েছে এবং কুইক রেসপন্স টিমও মোতায়েন করা হয়েছে, লিখেছেন মমতা। পাশাপাশি তাঁর আবেদন, “সকলে সতর্ক থাকুন।”
আমফানের স্মৃতি উস্কে দিয়ে ঠিক এক বছরের মাথায় আতঙ্ক এবং আশঙ্কা বাড়াচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হওয়া নিম্নচাপকে নিয়ে এখন থেকেই যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় সরকার। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, ২৬ মে সন্ধ্যায় এই ঘূর্ণিঝড় ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আছড়ে পড়তে চলেছে। তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের আকারে এই সাইক্লোন আছড়ে পড়বে বলে জানা গিয়েছে। তবে মৌসম ভবন যে তথ্য এ দিন প্রকাশ্যে এনেছে, তাতে বড় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
সূত্রের খবর, শনিবার এই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সেক্রেটারি। সেই বৈঠকে একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের আধিকারিক উপস্থিত ছিলেন। আজই মৌসম ভবনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২৬ মে বাংলা এবং ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় প্রতি ঘণ্টায় হাওয়ার গতিবেগ ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার পর্যন্ত থাকবে। আপাতত পূর্বাভাস এমনটাই। ফলে এই ঘূর্ণিঝড় আমফানের থেকেও বিধ্বংসী হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এই ঘূর্ণিঝড় প্রথমেই ধাক্কা মারবে বাংলার এবং ওড়িশার উপকূলে। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মোট ৬৫ টি জাতীয় বিপর্যয় মোবাবিলা বাহিনীর দল মোতায়েন করা হয়েছে। ২০ দলকে বাড়তি কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য তৈরি রাখা হচ্ছে।
ইয়াসের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নিতে কেন্দ্রীয় স্তরেও প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়েছে। এ দিন বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সেক্রেটারি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের আধিকারিকরা। মৌসম ভবনের পক্ষ এই বৈঠকে জানানো হয়েছে, ঝড়ের গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৬৫ টি দল মোতায়েন করা থাকবে। ২০ টি অতিরিক্ত টিমকে স্ট্যান্ডবাই হিসেবে রাখা হবে।