ব্লু স্টারের বিরুদ্ধে অনিশ্চিত রয় কৃষ্ণ।
দু’বছর পর আবার যেন জীবন ফিরে পেল যুবভারতী। সংযুক্তিকরণের পর সোমবার বিকেলে প্রথমবার সল্টলেক স্টেডিয়ামের সবুজ গালিচায় অনুশীলনে নামে এটিকে মোহনবাগান। ডুরান্ড, কলকাতা লিগের ফাইনাল হলেও গত দুই বছরে ইস্ট-মোহনের খেলা হয়নি। এটিকের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার পর মঙ্গলবার প্রথমবার যুবভারতীতে খেলবে মোহনবাগান। তাই ম্যাচটাকে কেন্দ্র করে সমর্থকদের উৎসাহ এবং আগ্রহ তুঙ্গে। এএফসির যোগ্যতাঅর্জন পর্বের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার ব্লু স্টারের বিরুদ্ধে নামবে সবুজ মেরুন। খাতায় কলমে প্রতিপক্ষের থেকে দশগুণ এগিয়ে মোহনবাগান। তাসত্ত্বেও শ্রীলঙ্কার দলকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন এটিকে মোহনবাগানের কোচ।
এই যুবভারতীতে সাতমাস আগে এফসি গোয়ার হয়ে ডুরান্ড কাপ জিতেছিলেন জুয়ান ফেরান্দো। কিন্তু সেবার সমর্থন তাঁদের পক্ষে ছিল না। এবার ৩৩ হাজার সাপোর্টারদের উপস্থিতিতে নামার জন্য মুখিয়ে স্প্যানিশ কোচ। ফেরান্দো বলেন, ‘আমি খুবই উত্তেজিত। দু’বছর পরে এখানে ম্যাচ হবে। সমর্থকরা নিজের দলকে সাপোর্ট করতে পারবে। আমরা খুবই খুশি। ২০ দিন আগেও পরিস্থিতি কঠিন ছিল।
কিন্তু গত দশ দিন ধরে সব ফুটবলারকে পেয়েছি। জাতীয় দলের ফুটবলাররা, বিদেশিরা দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। সবাই পরিশ্রম করছে। আশা করব সমর্থকরা আমাদের সাপোর্ট করতে মাঠ ভরিয়ে দেবে। সাপোর্টারদের সামনে খেলা আমাদের কাছে ১০০ শতাংশ অ্যাডভান্টেজ। মঙ্গলবার আমাদের সামনে একটা বড় চ্যালেঞ্জ।’
ব্লু স্টারের বিরুদ্ধে অনিশ্চিত রয় কৃষ্ণ। তাঁর খেলার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। যদিও এই বিষয়ে খোলসা করে কিছু বলেননি এটিকে মোহনবাগানের কোচ। এই প্রসঙ্গে ফেরান্দো বলেন, ‘রয় কৃষ্ণর একটা সমস্যা হয়েছে। সেটা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। দেখা যাক কী হয়।’ মঙ্গলবারের ম্যাচে নেই সন্দেশ ঝিঙ্গনও। বাকি সবাইকেই পাওয়া যাবে। গতবছর এএফসি কাপেই সবুজ মেরুন জার্সিতে অভিষেক হয়েছিল জনি কাউকোর। কিন্তু রেজাল্ট ভাল হয়নি। আইএসএলেও সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে যেতে হয়েছে। এবার এএফসি কাপের মাধ্যমে গোটা মরশুমের ব্যর্থতা ঢাকতে চাইছেন এটিকে মোহনবাগানের তারকা ফুটবলার। কাউকো বলেন, ‘আমরা কী পারি সেটা করে দেখানোর সেরা সুযোগ। হতাশজনক মরশুমের পর নিজেদের প্রমাণ করার আদর্শ মঞ্চ।’
এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে নামার আগে স্বস্তিতে নেই ব্লু স্টার।
একেতে দেশে আর্থিক সঙ্কট, তারওপর ভিসা সমস্যায় কাঠমান্ডু থেকে সরাসরি কলকাতায় আসার বদলে দেশে ফিরে আবার আসতে হয়েছে দলকে। যার ফলে এমনিতেই অনুশীলনের যথাযত সময় এবং সুযোগ পায়নি ব্লু স্টার। গোদের ওপর বিষফোঁড়া। ১৫ জন ফুটবলারের লাগেজ চেন্নাই বিমানবন্দরে আটকে যায়। তাই রবিবার বিকেলে কিট, বুট ছাড়াই প্র্যাকটিস করে ব্লু স্টারের ফুটবলাররা। চোট এবং ভিসা সমস্যায় দলের সঙ্গে আসতে পারেননি অধিনায়ক তারাঙ্গা এবং সহ অধিনায়ক লাহিরু। তাই স্বভাবতই অনেক পিছিয়ে শ্রীলঙ্কার দল। তবে বিনা লড়াইয়ে জমি ছাড়তে চায় না। দেশের এই আর্থিক সঙ্কটের মধ্যেও শ্রীলঙ্কার ফুটবলকে জনপ্রিয় করাই লক্ষ্য ব্লু স্টারের কোচের। রাজামানি বলেন, ‘আমাদের দেশ এখন অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। অবশ্যই এর প্রভাব খেলার পড়ে। তবে আমরা ফুটবল ভালবাসি। আমরা শ্রীলঙ্কার সুপার লিগে চ্যাম্পিয়ন। আমাদের দেশে অ্যাথলেটিক্স, ক্রিকেটের মতো ফুটবল ততটা জনপ্রিয় নয়। আমাদের লক্ষ্য দেশে ফুটবলকে জনপ্রিয় করা।’ দীর্ঘ দু’বছর পর প্রিয় দলের খেলা দেখার সুযোগ পাবে কলকাতার ফুটবল ফ্যানরা। তাই মোহনবাগান সমর্থকদের কাল একটাই ঠিকানা, যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন।