এশিয়ার জন্য ১০০ কোটি করোনা টিকা তৈরি হবে ভারতে
এশিয়ার জন্য ১০০ কোটি করোনা টিকা তৈরি হবে ভারতে
Quad গোষ্ঠির দেশগুলির প্রথম শীর্ষ বৈঠকে ভবিষ্যতের রূপরেখা নির্ধারণ করা হল। চারটি দেশ হাত মিলিয়ে করোনা টিকা তৈরির প্রক্রিয়ায় গতি আনতে সম্মত হয়েছে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে বোঝাপড়া সুদৃঢ় করার জন্য তিনটি ওয়ার্কিং গ্রুপ তৈরি করা হবে বলে এদিন যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
এদিনের বৈঠকের উদ্যোক্তা ছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন। উপস্থিত ছিলেন নরেন্দ্র মোদী, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী সুগা। ইন্দো প্যাসিফিকে চিন যেভাবে রক্তচক্ষু দেখাচ্ছে, সেটা কি ভাবে মোকাবিলা করা হবে, সেই নিয়ে এদিন বিস্তারিত আলোচনা হয়। মোদী বলেন যে এদিনের বৈঠকে টিকা, পরিবেশ বদল ও নয়া প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কোয়াডের যে উদ্দেশ্য সেটা ভারতের বসুদেব কুটুম্বকুম-অর্থাৎ সারা বিশ্বই একটি পরিবার সেই বিশ্বাসের সঙ্গে খাপ খায় বলে তিনি জানান। মাত্র ১৮ মাস আগেই কোয়াড দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠক হয়েছিল। এবার শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের মাধ্যমে এটা প্রমাণিত হল যে কোয়াড ক্রমশই পরিণত হচ্ছে বলে জানান মোদী। অঞ্চলের ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে এটি বড় ভূমিকা পালন করবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
মোদীর মতোই সরাসরি চিনের কথা বলেননি বাইডেন সহ অন্যান্য নেতারা। বাইডেন বলেন যে এই অঞ্চলে আন্তর্জাতিক আইন বলবৎ থাকতে হবে, কোনও রকম জুলুমবাজি চলবে না। মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক চারটি দেশের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি জানান। তবে আকারে ইঙ্গিতে চিনের কথা বারবারই উঠে আসে কথায়। এমনকী চিনের আচার আচরণে চিন্তিত হয়েই যে এত দ্রুত এই শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক হচ্ছে সেটাও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্তারা জানান। বৈঠকেও চিনের গতিবিধি নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়। চিনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত সংঘর্ষের বিষয়টিও ওঠে ও অন্যান্য দেশকে এই বিষয়ে ভারত পাশে পেয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।
.সরকারি অবশ্য ভারতের তরফ থেকে বিদেশমন্ত্রী শ্রীংলা জানান যে কোয়াড কোনও দেশের বিরুদ্ধে নয়। এটি ইতিবাচক উদ্দেশ্যে গঠিত। এদিন কোয়াড ভ্যাকসিন পার্টনারশিপ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চার দেশই নিজের সম্পদ এতে কাজে লাগাবে যাতে বিভিন্ন দেশকে সুলভে টিকা দেওয়া যায়।
আমেরিকায় ডেভেলপ হওয়া টিকা তৈরি করা হবে ভারতে। এর জন্য টাকা দেবে US Development Finance Corporation (DFC), Japan International Cooperation Agency (JICA), Japan Bank of International Cooperation (JBIC) ইত্যাদি। ২০২২ সালের শেষ অবধি কম করে এক কোটি টিকা তৈরি করার টার্গেট করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া টাকা তো দেবেই কোল্ড চেনের জন্য, প্রশিক্ষণও দেবে ও বিভিন্ন ভারতীয় মহাসাগর ও প্যাসিফিক আইল্যান্ডে টিকা পৌঁছে দেবে। সস্তায় ঋণ দেবে জাপানও। ভ্যাকসিন বণ্টন করার কাজে ব্যবহার করা হবে COVAX WHO, Gavi, Asean প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের সাহায্য।
তিনটি ওয়ার্কিং গোষ্ঠী তৈরি করার সিদ্ধান্ত এদিন নেওয়া হয়েছে। একটি হস ভ্যাকসিন এক্সপার্ট গ্রুপ যেখানে বোঝাপড়ার রূপরেখা চূজডান্ত করা হবে। একটি হবে পরিবেশ রক্ষা বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ। সেটির মূল লক্ষ্য থাকবে প্যারিস চুক্তিকে বাস্তবায়িত করা।