হাওড়া থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফের বালি পুরসভা তৈরির সিদ্ধান্ত
হাওড়া পুরসভার সঙ্গে বালি পুরসভাকে মিশিয়ে দেওয়া নিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষোভ ছিলই। এর উপরে পুর পরিষেবা-সহ প্রশাসনিক কাজে নানা সমস্যা দেখা দেওয়ায় অবশেষে হাওড়া থেকে আলাদা করে ফের নতুন বালি পুরসভা তৈরির সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কী ভাবে আলাদা করে নতুন বালি পুরসভা তৈরি হবে, তার রূপরেখা তৈরি করছে রাজ্য পুর দফতর। জেলা প্রশাসনকে নতুন পুরসভা তৈরির প্রস্তাবের কথা জানিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।
রাজ্যে তৃণমূল সরকার দায়িত্ব নেওয়ার চার বছর পরে ২০১৫ সালের জুলাই মাসে বালি ও হাওড়া পুরসভার সংযুক্তিকরণ করা হয়।১৩২ বছরের পুরনো বালি পুরসভার যেখানে ৩৫টি ওর্য়াড ছিল, তা পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়ায় ১৬টি ওয়ার্ডে নামিয়ে আনা হয়। এই সংযুক্তিকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রথম থেকেই ক্ষোভ জমতে থাকে বালির বাসিন্দাদের মধ্যে। এর প্রভাব পড়ে গত লোকসভা নির্বাচনেও। পুরসভার ১৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭টি ওয়ার্ডেই শাসক দল হেরে যায়। এর মধ্যে বিভিন্ন ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের দুর্নীতি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় জনমানসে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। পুর পরিষেবার কাজেও নানা গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। মানুষের হয়রানি বেড়ে যাওয়ার অভিযোগও উঠতে থাকে। এলাকার বাসিন্দারা তাই বালি পুরসভাকে আলাদা করে দেওয়ার দাবি তোলেন।
এ ব্যাপারে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘বালি থেকে হাওড়া পুরসভার দূরত্ব বেশি হওয়ায় সেখানকার স্থানীয় মানুষের চাহিদা ছিল পুর প্রশাসনিক ব্যবস্থা তাঁদের এলাকার মধ্যে থাকুক। তা ছাড়া বালি-বেলুড় একটি ঐতিহ্যবাহী জায়গা। সেখানকার মানুষ যাতে পুর পরিষেবা ঠিক মতো পান, তাই তাঁদের দাবি মেনেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
হাওড়া পুরসভার সঙ্গে বালিকে সংযুক্ত করার পরে প্রশাসনিক কাজের জন্য পুরনো বালি পুরভবনে একটি অফিস করা হলেও গত পাঁচ বছরে সেখানে আলাদা করে কোনও বরো চেয়ারম্যান ছিলেন না। এমনকি পুর ভবনটিকেও ঠিক মতো প্রশাসনিক কাজে ব্যবহার করা হত না বলে এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ। ট্রেড লাইসেন্স থেকে জমি, বাড়ির মিউটেশন করতে বারবার বালির মানুষদের হাওড়ায় ছুটতে হত। এই সমস্যার সমাধান করতে তাই বালিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি পুরসভা তৈরি করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।