বেঙ্গালুরুতে জমজমাট পাল বাড়ির পুজো
ব্যাঙ্গালুরু, কলকাতার বনেদী বাড়ির পুজো গুলির মতোই সাবেকিয়ানা ও জাঁকজমকের দিক থেকে কোনো অংশে কম নয় বেঙ্গালুরুর পাল বাড়ির পুজো ।
বেঙ্গালুরুর হিন্দুস্থান এরোনটিক এলাকায় এই পুজো দেখতে দূর দুরান্ত থেকে প্রতি বছর বহু মানুষ ভীড় করেন। এবছরও তার কোনো ব্যাতিক্রম হয়নি। বাঙালি অবাঙালি নির্বিশেষে বহু মানুষ প্রতিদিন ভীড় করছেন এই পুজো দেখতে।
পালবাড়ির পুজোতে এলে মনেই হতে পারে কলকাতার কোনও সাবেক পুজো দেখতে এসেছেন। জাঁকজমকও কম নয় এখানে। কলকাতা থেকে প্রতিমা শিল্পিকে এনে ঠাকুর তৈরি হয়েছে এখানেই। ভোগ ও মিষ্টি তৈরির জন্যও সেই কলকাতার ক্যাটারার থেকে হালুইকর, পুরোহিত থেকে ময়রা। একেবারে প্রত্যেকের জন্যে হোটেলের মতো উচ্চ মানের থাকা-খাওয়ার সুবন্দোবস্ত করেছেন পাল বাড়ির পুজোর মুল উদ্যোক্ত রোজী পাল।
কলকাতার শ্যামবাজারে বড়ো হয়ে ওঠা রোজি ছোটবেলা থেকেই তাঁর বাবা লোকনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধেরে পুজো দেখতে যেতেন। পরে স্থানীয় পুজোর সঙ্গে জড়িয়েও পড়েন। বাবার সঙ্গে ছোটবেলার পুজোর স্মৃতি বাঁচিয়ে রাখতেই কয়েক বছর আগে বেঙ্গালুরুতে পুজো শুরু করেন। তাঁর শ্বশুরবাড়ি ফলতার জমিদার, তবে দীর্ঘদিন বেলুড়ের বাসিন্দা হওয়ায় রামকৃষ্ণ মিশেনের পুজো দেখতে প্রতিবছর যেতেন। স্বামী সুজিত পাল কর্মসূত্রে বেঙ্গালুরুতে যাওয়ায় রোজিও সেখানের বাসিন্দা হয়ে যান। শুরু করেন পুজো। মাঝে কয়েক বছর বিদেশে থাকায় বাধ্য হয়েই পুজো বন্ধ রাখতে হয়েছিল।
নতুন করে পুজো এবার চতুর্থ বছরে। বিশাল ফ্ল্যাটে বড় পুজোর আয়োজন। সঙ্গে গান, নির্ভেজাল আড্ডা। বাঙালি খাওয়াদাওয়া তো আছেই। পুজোর ভাবনা রোজির হলেও তা বাস্তবায়িত হয় পাল পরিবারের কর্তা সীতাংশুশেখর ও তাঁর স্ত্রী শিপ্রা পালের উদ্যোগে। তাঁরা বেঙ্গালুরুর স্থায়ী বাসিন্দা নন। কলকাতা থেকে পুজোর উপচার তাঁরাই নিয়ে যান। খেয়াল রাখেন সবকিছু নিষ্ঠার সঙ্গে হচ্ছে কিনা সেই দিকে। ভিন রাজ্যে গিয়েও পূজার ঐতিহ্য ও উপাচারের খামতি রাখেনি পাল পরিবার। যেন কলকাতার পুজোর জমজমাট ও ঐতিহ্যের স্বাদ পাচ্ছেন ব্যাঙ্গালোর বাসিরাও।