বেশ অস্বস্তিতে ঘাসফুল শিবির
ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে তৃণমূলের অন্দরে চিত্র। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই দুই নেতৃত্বকে যে সমভাবে গ্রহণ করছেন না নেতারা, তা একপ্রকার পরিষ্কার হয়ে সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। একদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নবীনদের প্রতি আস্থা’, অন্যদিকে প্রাচীন পন্থায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্বাস, এই দুইয়ের দ্বন্দ্ব উপভোগ করছেন সাধারণ জনতা।
কয়েকদিন ধরেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কার্যতই দ্বিধা বিভক্ত তৃণমূল। সে এক ব্যক্তি এক পদ নীতিই হোক বা বয়স্ক নেতাদের অবসর পরিকল্পনা। অভিষেকের এক ব্যক্তি এক পদ নীতি যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমর্থন করেন না তা তিনি জানিয়েছিলেন আগেই। এর মধ্যেই নেতাদের ৬০ বছরে অবসরের পরিকল্পনাকে সমর্থন করেন সৌগত রায়। তাঁকে মুখ খুলতে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বারণ করলেও অভিষেকের সুরে সুর মেলান তিনি। এরপরই বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন দলের একাংশ। এক ক্ষুব্ধ সাংসদ বলেন, ‘৭৫ বছর বয়সে এসে সৌগতবাবুর বোধদয় হল কেন? তিনি তো ৬০ বছরেই কলেজ থেকে অবসর নিয়েছিলেন। তারপর ১৫ বছর রাজনীতি চালিয়ে গেলেন কেন? ১৫ বছর চুটিয়ে রাজনীতি করে সাংসদ বিধায়ক হয়ে এখন এসব বলার মানে টা কী?’
তৃণমূলের অপরাংশের দাবি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থানে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে দলের ৫ শীর্ষ নেতার। নিজেদের স্বার্থে ঘা লাগাতেই ফুঁসে উঠেছেন তাঁরা। নতুন মুখদের তুলে আনার জন্য এদের কয়েক জনকে কিছু পদ থেকে সরানো হয়েছে। যার ফলে মৌরসীপাট্টা মারতে না পেরে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন বসে বসে।
তবে আরেক দল অভিযোগের তীরে বিদ্ধ করেছে আইপ্যাককেই। দলের আভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে পিকের অতিসক্রিয়তা যে মমতার বরদাস্ত নয় সে কথাই মনে করিয়ে দিয়ে তাঁদের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদন ছাড়াই প্রার্থী তালিকায় রদবদল ঘটিয়েছে আইপ্যাক।
আস্তে আস্তে জাতীয় স্তরে নিজেদের শক্তি বাড়াচ্ছে তৃণমূল। সামনেই গোয়া বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থীও দিয়েছে তারা। এই পরিস্থিতিতে দলের অন্দরের এহেন খাদ সদৃশ ফাটল যে বিরোধীদেরই সুবিধার কারণ হবে তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ থাকে না। এই মুহূর্তে গোয়ায় তৃণমূলের ফলাফল নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করছেন পর্যবেক্ষকরা। পুরো ব্যাপারটিতে কার্যতই চরম অস্বস্তিতে রাজ্যের ঘাসফুল শিবির।