বিশ্ব সেবাশ্রম সঙ্ঘে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শ্রীশ্রী জগদ্ধাত্রী পূজা।
প্রতিবারের মতো এবছরও বিশ্ব সেবাশ্রম সঙ্ঘে শ্রীশ্রী জগদ্ধাত্রী পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিশ্ব সেবাশ্রম সঙ্ঘ প্রতিষ্ঠাতা শ্রীসমীরেশ্বর ব্রহ্মচারী নিজের হাতেই মা জগদ্ধাত্রীর অপরূপ মূর্তি নির্মাণ করেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে শ্রীসমীরেশ্বরের হাতে নির্মিত দেবী মূর্তির শুভ উদ্বোধন করেন স্থানীয় বিধায়িকা তথা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অর্থ, স্বাস্থ্য, ভূমিসংস্কার প্রতিমন্ত্রী এবং পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
…….নীচে পুজোর ভিডিও দেওয়া হলো……
মন্ত্রী বলেন মৃন্ময়ী মা যা নিজের হাতে থেকে তৈরি করেছেন সমীর ব্রম্মচারী মহারাজ তাকে পুজোর মাধ্যমে প্রাণ দিয়ে চিন্ময়ী করে তোলার অপেক্ষায় আমরা সবাই। সমীর ব্রম্মচারী এই ধরনের মূর্তি তৈরি করতে পারেন আমার জানা ছিল না বলেন মন্ত্রী। জানলাম খুব ভালো লাগলো।চিন্ময়ী মা জগদ্ধাত্রী। জগতের সৃষ্টি কর্তা। জগত পালনের কত্রী। মা সবাই কে খুব ভালো রাখুন।মায়েদের শক্তি দিলে সমাজ শক্তিশালী হবে। সমাজকে ভালো রাখেন মা। মায়েদের শক্তিশালী করুন। এই প্রার্থনা করব।জগৎ পালনের ধার্ত্রী হিসেবে মায়ের আচলের আশ্রয় থেকে কেউ কখনো বঞ্চিত না হই। আশ্রম কন্যা স্বস্তিকা খুব মন দিয়ে পুজো করে। পড়াশোনা যেমন একটি পুজো। মন দিয়ে পুজো করাটা মায়ের আরাধনা। জীবনে চলার সঠিক পথ দেখায়। চলার পথটাকে সঠিকভাবে নির্ধারণ করে দেয়। এই অবস্থা থেকে বের করে নিয়ে আসেন মা। সকলকে ভালো রাখতে হবে। মা ছাড়া কাকে বলব। নতুন শব্দ। নিও নর্মাল আমরা চাই না। সব নতুন ভবে নয়। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাই।মুখোশ পরব আবার মুখ ও ঢাকব। দুটো একসঙ্গে চলবে না। সবাই মায়ের কাছে বলব সবাই মিলে একসাথে লড়াই টা লড়ব। উপস্থিত ছিলেন নিউ ব্যারাকপুর পৌরসভার মুখ্য প্রশাসক প্রবীর সাহা, উপ প্রশাসক মিহির দে, প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য সুমন দে, নির্মিকা বাগচী, এসিপি ২ঘোলা শান্তব্রত চন্দ, বিমানবন্দর থানার আইসি শান্তনু সরকার, কোঅর্ডিনেটর ডাঃ অশোক মিত্র, চিত্রকর দেবাশিস মিত্র, প্রমুখ । মন্ত্রী বলেন শুদ্ধতা ও সাত্ত্বিকতার সঙ্গে শাস্ত্রীয় নিয়মে কীভাবে মায়ের পূজা করা উচিত বিশ্ব সেবাশ্রম সঙ্ঘ-র পূজা চোখে আঙ্গুল দিয়ে তা দেখিয়ে দেয়। প্রতিষ্ঠাতা শ্রীসমীরেশ্বর ব্রহ্মচারী এই উদ্দেশ্য নিয়েই পূজা করেন যেখানে শাস্ত্রীয় উপকরণ এবং মায়ের প্রতি ভক্তি ও শ্রদ্ধা নিবেদনে যেন কোনও খামতি না থাকে। পূজার প্রস্তুতি থাকে এখানে বছরভর।শ্রী সমীরেশ্বর ব্রহ্মচারী বলেন জগদ্ধাত্রী পূজায় প্রয়োজনীয় সমস্ত বিরল দুঃষ্প্রাপ্য উপকরণ নিবেদিত হয় মায়ের উদ্দেশ্যে। পূজায় লাগে সপ্ত-নদীর জল। সাত নদ-নদীগুলি হল—গঙ্গা, যমুনা, গোদাবরী, সরস্বতী, নর্দমা, সিন্ধু, কাবেরী। বিশ্ব সেবাশ্রম সঙ্ঘ-র প্রতিষ্ঠাতা শ্রীসমীরেশ্বর ব্রহ্মচারী-র কাছে জানা গেল এখানের পূজায় এই সাত নদীর জলই ব্যবহার করা হয়।
মায়ের মহাস্নানে দরকার হয় হয় ১৫ প্রকার মাটি। যেমন – দেবদ্বার মৃত্তিকা (দেবতা-মন্দিরের মাটি), অশ্বদন্ত মৃত্তিকা (ঘোড়া যে ঘাস খাবে সেখানের মাটি), গজদন্ত মৃত্তিকা (হাতির দাঁতের মাটি), বরাহ দন্ত মৃত্তিকা (শূকরের দাঁতের মাটি), বস্মিক মৃত্তিকা (উঁই পোঁকার বাসার মাটি), রাস্তার চারমাথার মাটি, বৃষ শিং মৃত্তিকা (ষাঁড়ের শিংয়ের মাথার মাটি), রাজদ্বার মৃত্তিকা (রাজবাড়ির মাটি), নদীর উভয় কুলের মৃত্তিকা, কুশমূলের মৃত্তিকা, সরোবর মৃত্তিকা, গঙ্গা মৃত্তিকা, বেশ্যাদ্বার মৃত্তিকা, পর্বত শিখরের মৃত্তিকা, যজ্ঞশালার মৃত্তিকা।
শুধু তাই নয় পূজায় মহাস্নানের জন্য প্রয়োজন বিভিন্ন প্রকার জলও। যেমন— আকাশগঙ্গা মন্দাকিনী নদীর জল, সরস্বতী নদীর জল, সহস্রধারার জল, চন্দন জল, শিশিরের জল, বৃষ্টির জল, মিষ্টি জল, পুকুরের জল। অষ্টকলসীর স্নানের জলে লাগে সাত সমুদ্রের জল, আকাশগঙ্গা মন্দাকিনীর, ঝরনার জল, সোনার জল, রূপার জল, পদ্মরেণুর জল, চন্দনবাসিত নদীর জল, সর্বতীর্থের জল। শ্রীসমীরেশ্বর ব্রহ্মচারী জানালেন আশ্রমের সংগ্রহশালায় প্রতিটি মাটি ও জলই সংগ্রহে আছে এবং মায়ের পূজার তা ব্যবহৃত হয়।