কেন্দ্রের তরফে থেকেও জানিয়ে দেওয়া হল যে, বুস্টার ডোজ় দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা আপাতত নেই কেন্দ্রের।
করোনার বুস্টার ডোজ় নিয়ে এখনও নিশ্চিত নন ভারতের বিশেষজ্ঞরা। বুস্টার ডোজ় দিলেই যে করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করা সহজ হবে, এমন প্রমাণ নেই বলেই জানিয়েছেন একাধিক গবেষক। এবার কেন্দ্রের তরফে থেকেও জানিয়ে দেওয়া হল যে, বুস্টার ডোজ় দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা আপাতত নেই কেন্দ্রের। দিল্লি হাই কোর্টে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বুস্টার ডোজ় সংক্রান্ত কোনও গাইডলাইন আপাতত কেন্দ্রের কাছে নেই।
ভারতের টিকা সংক্রান্ত যে দুটি বিশেষজ্ঞ কমিটি রয়েছে, তাদের তরফ থেকে কোনও গাইডলাইন দেওয়া হয়নি। ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজরি গ্রুপ ও ন্যাশনাল এক্সপার্ট গ্রুপ অন ভ্যাকসিন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে।
করোনার বুস্টার ডোজ় দেওয়া হবে কি না, দিলেও কবে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে কেন্দ্রের কাছে জানতে চেয়েছিল আদালত। একটি হলফনামায় বুস্টার ডোজ়ের বিষয়ে জানিয়েছে কেন্দ্র। সেখানে বলা হয়েছে, ভারতের দুই বিশেষজ্ঞ কমিটি এখনও কোনও গাইডলাইন দেয়নি। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে যে, আপাতত দেশের সব মানুষের টিকাকরণ সম্পূর্ণ করাই লক্ষ্য। দিল্লি হাই কোর্টে বিচারপতি বিপিন সাংঘি ও বিচারপতি যশমীত সিং-এর ডিভিশন বেঞ্চে এ কথা জানিয়েছে কেন্দ্র। বুস্টার ডোজ়ের প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে আমেরিকার মতো দেশের উদাহরণও দেওয়া হয় ডিভিশন বেঞ্চের তরফে।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চেরর প্রধান ডাঃ বলরাম ভার্গভ জানিয়েছেন, এখনও অবধি এমন কোনও বিজ্ঞানসম্মত প্রমাণ মেলেনি যার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যেতে পারে যে বুস্টার ডোজ় আবশ্যক। ভার্গভ জানিয়েছেন, দেশের সব প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের করোনা টিকা দেওয়া এবং টিকা গ্রহণের জন্য উপযুক্ত প্রত্যেকের টিকার বন্দোবস্ত করাই এখন সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার। তিনি আগেই জানিয়েছিলেন, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বুস্টার ডোজ় আবশ্যক, এই সংক্রান্ত কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এখনও মেলেনি।
কিছুদিন আগে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট সহ অনেকেই বুস্টার ডোজ় শুরু করার অনুমতি চেয়ে কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেছিলেন। সেই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য জানিয়েছিলেন, এই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকার সরাসরি সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। যখন আইসিএমআর জানাবে যে বুস্টার ডোজ় দেওয়া প্রয়োজন, একমাত্র তখন এই নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে। এখন সরকারের একমাত্র লক্ষ্য উপযুক্ত সকল জনসংখ্যাকে করোনা টিকার দুটি ডোজ় দিয়ে টিকাকরণ সম্পূর্ণ করা। সেই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে বুস্টার ডোজ় নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে। দেশে যথেষ্ট পরিমাণে টিকা মজুত আছে বলেও জানান তিনি।
ভারতের যে টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি রয়েছে, তার মধ্যে সেরাম ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়ার তরফে জানানো হয়েছে, আগামী বছরের শুরুতেই তারা কেন্দ্রের কাছে বুস্টার ডোজ়ের অনুমোদনের জন্য আবেদন করতে পারে।