চারদিনের জন্য বন্ধ থাকছে ব্যান্ডেল স্টেশন দিয়ে রেল চলাচল।
আজ, শুক্রবার থেকে টানা চারদিনের জন্য বন্ধ থাকছে ব্যান্ডেল স্টেশন দিয়ে রেল চলাচল। লোকাল তো বটেই, চলবে না এক্সপ্রেস ট্রেনও। ফলে যাত্রীদের বিপুল ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হবে। সম্ভাব্য এই দুর্ভোগের জন্য রেলের পরিকল্পনার অভাবকে দায়ী করছে নিত্যযাত্রীদের একাংশ। তাদের অভিযোগ, লকডাউনে টানা দু’বছর ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। সেই সময় এই ধরনের দীর্ঘমেয়াদি কাজ সহজেই সেরে ফেলা যেত। অথচ রেল কর্তৃপক্ষ তা করেনি। করোনাপর্ব কাটিয়ে মানুষ যখন আবার দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় ফিরে এসেছে অনেকটাই, তখন টানা চারদিন রেল চলাচল বন্ধ রাখার যুক্তি খুঁজে পাচ্ছে না অনেকেই। প্রসঙ্গত, রেলের স্বয়ংক্রিয় ইন্টারলকিং সিস্টেম তৈরির জন্য ব্যান্ডেল স্টেশন দিয়ে ট্রেন চলাচল চারদিন বন্ধ করা হচ্ছে।
সম্প্রতি একবার এই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ করেছিল রেলদপ্তর। তখন বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত ট্রেন বন্ধ করা হয়েছিল। এবার ২৭ থেকে ৩০ মে সারাদিনই রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হচ্ছে। সেই কারণে যাত্রীদের ভোগান্তি আরও বাড়বে বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে। রেলদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্য যোগাযোগকারী স্টেশন হিসেবে ব্যান্ডেলই শুধু নয়, একাধিক স্টেশনের মধ্যে রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকবে। হাওড়া-বর্ধমান মেইন লাইনে হাওড়া থেকে চুঁচুড়া পর্যন্ত ট্রেন চলবে। বর্ধমান থেকে ট্রেন চলবে খন্যান পর্যন্ত।
অর্থাৎ, চুঁচুড়া থেকে তালাণ্ডু পর্যন্ত এবং কর্ড লাইনে চুঁচুড়া থেকে ইসলামপাড়া হল্ট স্টেশন পর্যন্ত ট্রেন চলবে না। ব্যান্ডেলের দু’দিকে প্রায় পাঁচটি করে স্টেশনে ট্রেন যোগাযোগ থাকবে না। লাইনের মাঝপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় হাওড়া বা বর্ধমান—দু’দিকে যাওয়াই সময়সাপেক্ষ ও খরচবহুল হবে। মাঝখানের এই অংশটুকু বাদ দিয়ে দু’দিকে পরিষেবা চালু থাকলেও সব ট্রেন চলবে না। স্পেশাল ট্রেন হিসেবে কিছু লোকাল চালানো হবে। হাওড়া থেকে চুঁচুড়া যাওয়ার শেষ ট্রেন ছাড়বে রাত ৯টা বেজে ১০ মিনিটে। যদিও এরপরে তারকেশ্বর লোকাল স্বাভাবিক সময়েই চলবে বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে।
নিত্যযাত্রী মহলের দাবি, শুক্রবার ও সোমবার সাধারণ যাত্রী ও অফিসযাত্রীদের ভোগান্তি হবে। কিন্তু চারদিনই দুর্ভোগ পোহাতে হবে বেসরকারি সংস্থার কর্মী, পরিচারিকা, নাইটগার্ড, দিনমজুর, ছোট ব্যবসায়ী, সব্জি ব্যবসায়ীদের। এমনিতেই বাজারে সব পণ্যের চড়া দর এখন। রেলের এই কাজের জন্য পণ্য পরিবহণের খরচ বাড়লে দামে তার প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কিত অনেকে। ফলে শুধু যাত্রীরাই নয়, এই ভোগান্তির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব পড়বে আমজনতার উপরেও। কিছুদিন আগে এই অংশে রেল পরিষেবা বন্ধ থাকার সময় দেখা গিয়েছে, চুঁচুড়া স্টেশনে বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ আসার কারণে যানজট হচ্ছে। কীভাবে এই ক’দিন সামাল দেওয়া যাবে, সেটাই এই লাইনের নিত্যযাত্রীদের মূল চিন্তা।