‘যতই চেষ্টা করুন, বিজেপি জিততে পারবে না’, ‘চিটিংবাজি ভোট’ নিয়ে কমিশনকে মমতা
ভোটের পর বিজেপির দাবি, ‘খুব ভালো ভোট হয়েছে’। অন্যদিকে দিনভর নন্দীগ্রামে ছাপ্পা, এজেন্টদের বের করে দেওয়া, ভোটারদের ভয় দেখানোর অভিযোগ তুলে গেল তৃণমূল কংগ্রেস। তা সত্ত্বেও দ্বিতীয় দফায় ভোটের শেষ লগ্নে ‘ভিকট্রি সাইন’ দেখিয়ে তৃণমূলপ্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করলেন, নন্দীগ্রামে আবারও ঘাসফুল ফুটবে।
বৃহস্পতিবার দুপুর নন্দীগ্রামের বয়াল মক্তব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭ নম্বর বুথ থেকে বেরিয়ে মমতা অভিযোগ করেন, বিভিন্ন’জায়গা থেকে ভোট দিতে না দেওয়ার খবর আসছিল। নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছেন। ‘চূড়ান্ত অসভ্যতামি’ করেছেন। আবু তাহেরের বাড়ি গিয়েও তাণ্ডব চালিয়েছে বিজেপি। সে বিষয়ে ইতিমধ্যে নির্বাচনে কমিশনে ৬৩ টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বয়ালে গত কয়েকদিন ধরেই তাণ্ডব চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মমতা। তবে মমতার দাবি, সেই ‘চূড়ান্ত অসভ্যতামি’ সত্ত্বেও নন্দীগ্রামে তিনিই জিতবেন। তাঁর কথায়, ‘নন্দীগ্রাম নিয়ে চিন্তিত আমি। গণতন্ত্র নিয়ে চিন্তিত। নন্দীগ্রামে আমি জিতব মা-মাটি-মানুষের আশীর্বাদে। আপনারা দেখলেন, সকাল থেকে যেখানে বন্দুক নিয়ে বসে আছে, কাউকে ভোট দিতে দেয়নি, প্রত্যেকটা মানুষ আমায় শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। তার মানে ওরা (বিজেপি) যাই করুক না কেন, মানুষ আমায় ভোটটা দিচ্ছেন। তবে এখানে ভোটটা চিটিংবাজি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ভোট শুরুর প্রায় ছ’ঘণ্টা পর রেয়াপাড়ায় নিজের অস্থায়ী ঘাঁটি থেকে বেরিয়ে আসেন মমতা। রওনা দেন বয়ালের সাত নম্বর বুথের উদ্দেশে। সেখানেই সকাল থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগ উঠছিল। তৃণমূলের এজেন্টকেও বসতে দেওয়া হয়নি দাবি করে তৃণমূল। মমতা সেখানে পৌঁছাতে ধুন্ধুমার পরিস্থিতির তৈরি হয়। মমতা যখন বুথের ভিতরে ঢুকে যান, তখন বাইরে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান তোলা হয়। রীতিমতো সম্মুখ-সমরে অবতীর্ণ হন তৃণমূল এবং বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে রীতিমতো বেকায়দায় পড়ে পুলিশ। নামানো হয় র্যাফ। কিছুক্ষণ পর পৌঁছায় কেন্দ্রীয় বাহিনী। শেষপর্যন্ত প্রায় দু’ঘণ্টা পর মমতাকে বুথ থেকে বের করা হয়।
সেখান থেকে কিছুটা এগিয়েই মমতা অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রতি তাঁর কোনও রাগ নেই। বরং ‘বন্ধু’ কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রতি গর্বিত বলে দাবি করে মমতার অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নির্দেশে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। একইসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের প্রতিও ক্ষোভ উগরে দেন মমতা। বলেন, ‘আমি জানি না, নির্বাচন কমিশনকে কী বলব। আমি ক্ষমাপ্রার্থনা করে বলছি, আমার ওদের কত চিঠি দিয়েছি। কিন্তু ওরা পুরোপুরি একতরফাভাবে বিজেপির প্রার্থীদের সমর্থন করছেন। তাদের জন্য এত বাড় বেড়েছে বিজেপি। মানুষ খুন করছে, মানুষকে আহত করছে। ভোট লুঠ করছে।’ সঙ্গে তিনি বলেন, ‘আপনারা নন্দীগ্রামে যা করেছেন, তা দয়া করে পরে করবেন না। আপনারা যাই করুন না কেন বিজেপি জিততে পারবে না। শুধু নন্দীগ্রাম নয়, বাকি ২৯ টি আসনেও জিততে পারবে না।’