ধরমশালায় দ্বিতীয় টি-২০ ম্যাচ জিতল ভারত।
দুর্দান্ত শ্রেয়স আইয়ার। ভারতীয় দলে প্রত্যাবর্তনে নজর কাড়লেন সঞ্জু স্যামসন এবং রবীন্দ্র জাদেজা। এই ত্রয়ীর ব্যাটে ভর করে ধরমশালায় দ্বিতীয় টি-২০ ম্যাচ জিতল ভারত। জোড়া ম্যাচ জিতে টি-২০ সিরিজ পকেটে পুরল টিম ইন্ডিয়া। কাজে এল না দাসুন শানাকার বিধ্বংসী ইনিংস। বোলারদের ব্যর্থতায় ম্যাচ খোয়াল শ্রীলঙ্কা। প্রথমে ব্যাট করে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৮৩ রান তুলেছিল শানাকারা। ১৭.১ ওভারেই জয়সূচক রান তুলে ফেলে টিম ইন্ডিয়া। ম্যাচটা হাড্ডাহাড্ডি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শ্রেয়স, সঞ্জু, জাদেজার দাপুটে ব্যাটিংয়ে আত্মসমর্পণ লঙ্কার বোলারদের। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জঘন্য ফিল্ডিং। শুরুটা করলেন শ্রেয়স। শেষটা জাদেজার। ১৭ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে যায় ভারত। দুর্ধর্ষ জাদেজা। মাত্র ১৮ বলে ৪৫ রানে অপরাজিত থাকেন ভারতীয় অলরাউন্ডার। ৪৪ বলে ৭৪ রানে নট আউট থাকেন শ্রেয়স। ৪টি ছয় এবং ৬টি চারে ইনিংস সাজান। ম্যাচের সেরাও মুম্বইয়ের ব্যাটার। টি-২০ ক্রিকেটে এটাই শ্রেয়সের সর্বোচ্চ রান। নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজের পর শ্রীলঙ্কা। অধিনায়ক হিসেবে টানা তিনটে টি-২০ সিরিজ জিতলেন রোহিত শর্মা। ঘরের মাঠে ভারতের টানা সাত সিরিজ জয়। শুরুতে দাসুন শানাকার দানবিক ইনিংস। মাত্র ১৯ বলে ৪৭ রানে অপরাজিত থাকেন লঙ্কার অধিনায়ক। বিধ্বংসী ইনিংসে রয়েছে ৫টি ছক্কা এবং ২টি চার। অবিশ্বাস্য ব্যাটিং। প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং বিভাগ ধরাশায়ী হওয়ার পর দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন। ছ’নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ম্যাচের রং বদলে দেন শানাকা। প্রথম বল থেকেই মারকুটে মেজাজে পাওয়া যায় লঙ্কার নেতাকে। হর্ষল প্যাটেলের ওভারে একের পর এক ওভার বাউন্ডারি হাঁকান। ৪ ওভার বল করে ৫২ রান দিয়েছেন তরুণ পেসার। যা টি-২০ তে হর্ষলের সবচেয়ে খারাপ গড়। উইকেটের অন্য প্রান্তে অনবদ্য পথুম নিসঙ্কা। শ্রীলঙ্কাকে রানের পাহাড়ে পৌঁছতে তাঁর অবদানও অপরিসীম। ৫৩ বলে ৭৫ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন লঙ্কার ওপেনার। টসে জিতে শ্রীলঙ্কাকে ব্যাট করতে পাঠান রোহিত শর্মা। শুরুটা ভাল করে সিংহলীরা। ৮.৪ ওভারে ৬৭ রানে প্রথম উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। ৩৮ রানে আউট হন দানুস্কা গুনাথিলাকা। এরপর মাত্র ৩৫ রানে ৩ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। ফিরে যান আসালঙ্কা (২), মিশারা (১), চান্দিমাল (৯)। ১৪.৪ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে লঙ্কার স্কোর ছিল ১০২। মনে হয়েছিল আর খুব বেশি রান যোগ করতে পারবে না লঙ্কার ব্যাটাররা। কিন্তু ক্রিজে নেমে সবাইকে ভুল প্রমাণিত করলেন শানাকা। শেষ ৩২ বলে ৮১ রান যোগ করে শ্রীলঙ্কা। নির্ধারিত ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৮৩ রানে শেষ করে শানাকারা। টি-২০ ক্রিকেটে নিজের অন্যতম সেরা ইনিংস খেলেন লঙ্কার অধিনায়ক। পাল্টা ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় ভারত। প্রথম ওভারের শেষ বলেই ফিরে যান রোহিত শর্মা। মাত্র ১ রানে চামিরার বলে বোল্ড হন টিম ইন্ডিয়ার নেতা। এই নিয়ে পাঁচবার রোহিতকে আউট করলেন শ্রীলঙ্কার জোরে বোলার। রান পাননি আগের দিনের ম্যাচের সেরা ঈশান কিষান। লাহিরু কুমারার একটা বাউন্সার সরাসরি উইকেটকিপার ব্যাটারের হেলমেটে লাগে। তারপর থেকেই অস্বস্তিতে ছিলেন ঈশান। পাঁচ ওভারের শেষে ১৬ রানে লাহিরু কুমারার বলেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন। ৪৪ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় ভারত। এরপর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন শ্রেয়স আইয়ার। আগের দিন যেখানে শেষ করেছিলেন সেখান থেকেই শুরু করেন। নবম ওভারে প্রবীণ জয়উইকরামাকে ব্যাক টু ব্যাক ছক্কা হাঁকিয়ে নিজের উপস্থিতির জানান দেন শ্রেয়স। ১০ ওভারের শেষে ২ উইকেট হারিয়ে ভারতের রান ছিল ৮০। আরও একটা অনবদ্য পঞ্চাশ উপহার দেন শ্রেয়স। করুণারত্নের ওভারে ছয় মেরে ৩০ বলে অর্ধশতরান সম্পূর্ণ করেন। অন্য প্রান্তে তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দেন সঞ্জু স্যামসন। দু’জনের দাপটে ম্যাচে ফিরে আসে ভারত। ২৫ বলে ৩৯ রান করে আউট হন সঞ্জু। বাকি কাজটা সারলেন রবীন্দ্র জাদেজা। দেখে মনে হল ম্যাচটা তাড়াতাড়ি শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন জাড্ডু।