তুলসিবেড়িয়ার গাঁতাইত পাড়ায় এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে চারটি ইভিএম এবং ভিভিপ্যাটের সেট নিয়ে এসে ধৃত সেক্টর অফিসার
তৃণমূল কংগ্রেস নেতার বাড়ি থেকে উদ্ধার হল ইভিএম ও ভিভিপ্যাট। আর সেই ইভিএম ও ভিভিপ্যাট নিয়ে যান খোদ সেক্টর অফিসার। তৃতীয় দফার ভোটের আগের রাতে হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় এমনই ঘটনা ঘটল। তার জেরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত সেক্টর অফিসার তপনকুমার সরকারকে সাসপেন্ড করেছে নির্বাচন কমিশন। গতরাতে উলুবেড়িয়া উত্তর বিধানসভার অন্তর্গত তুলসিবেড়িয়ার গাঁতাইত পাড়ায় এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে চারটি ইভিএম এবং ভিভিপ্যাটের সেট নিয়ে আসা হয়। সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় তৈরি হয় উত্তেজনা। স্থানীয়রা গৌতম ঘোষ নামে ওই তৃণমূল নেতার বাড়ি ঘেরাও করেন। শুরু হয় বিক্ষোভ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে চলে আসেন উলুবেড়িয়া ২ নম্বর ব্লকের বিডিও এবং সেক্টর অফিসার। তাঁদের ঘিরেও বিক্ষোভ দেখানো হয়। পৌঁছায় পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। তিমধ্যে ওই সেক্টর অফিসারকে সাসপেন্ড করেছে কমিশন। পরিবর্তে নয়া সেক্টর অফিসারকে নিয়োগ করা হয়েছে। রিপোর্টও তলব করা হয়েছে। পাশাপাশি জানানো হয়েছে, ওই চারটি ইভিএম রিজার্ভ ছিল। সেগুলি আর ব্যবহার করা হবে না। যে সেক্টর অফিসারকে নিয়ে এত কাণ্ড, তিনি নিজের দোষ স্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, সোমবার মধ্যরাতের পর বিডিও অফিসে গিয়েছিলেন। যেখানে থাকার বন্দোবস্ত হয়েছিল, সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী জায়গা দখল করে নিয়েছিল। দরজা বন্ধ করে ঘুমোচ্ছিল। তাই ক্লান্ত অবস্থায় রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন। সেই সময় তাঁর দুই সহযোগী সেক্টর অফিসার জানান যে তাঁদের চেনাশোনা এক ব্যক্তির বাড়ি সামনেই। সেখানে ঘণ্টাখানেক বিশ্রাম নেওয়ার কথা বলেন। সেজন্যই গিয়েছিলেন। কিন্তু তা তৃণমূল নেতার বাড়ি জানতেন না। কিন্তু ইভিএম নিয়ে গিয়েছিলেন কেন? সেক্টর অফিসারের দাবি, গাড়িতে ইভিএম রাখলে সমস্যা হতে পারত, তাই নিয়ে গিয়েছিলেন। সঙ্গে বলেন, ‘অনেকদিন ভোট করছি, এটা অবশ্যই ভুল করেছি।’বাড়িতে ইভিএম থাকার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন ওই তৃণমূল নেতাও। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, (বাড়িতে ইভিএম) পাওয়া গিয়েছে।’ তাঁর দাবি, গতরাত আটটা নাগাদই ঠিক হয়েছিল যে ওই সেক্টর অফিসার তাঁর বাড়িতে থাকবেন। কিন্তু দুটো নাগাদ তাঁরা আসনে। জানান যে তাঁরা বিশ্রাম নেবেন। কিন্তু সঙ্গে ইভিএম থাকায় আপত্তি তোলেন। তারইমধ্যে আশপাশের কারও চোখে ইভিএম পড়ে যায়। যদিও সেই দাবি মানতে নারাজ উলুবেড়িয়া উত্তরের বিজেপি প্রার্থী চিরণ বেরা। তাঁর দাবি, গতরাতে স্থানীয় কর্মীরা ফোন করে জানান যে তৃণমূল নেতার বাড়িতে ইভিএম রাখা হয়েছিল। উলুবেড়িয়া উত্তরে হার নিশ্চিত বুঝে ভোটলুঠের চেষ্টা করছিল তৃণমূল।