বিজেপি–র ‘পরিবর্তন যাত্রা’র পাল্টা তৃণমূলের ‘দিদির দূত’, ভোটপ্রচারে যানের লড়াই
বিজেপি–র ‘পরিবর্তন যাত্রা’র পাল্টা এবার তৃণমূলের ‘দিদির দূত’। একদিকে ছুটবে পদ্মফুল শিবিরের ‘রথ’ আর আর একদিকে ঘাসফুল শিবিরের ট্যাবলো–সজ্জিত বাস নেমে পড়েছে রাস্তায়। ‘দিদির দূত’ নামে এই প্রচারযানের উদ্বোধন করলেন সাংসদ তথা তৃণমূল যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জনসংযোগের উদ্দেশ্যে গত সপ্তাহে তৃণমূলের তরফ থেকে চালু করা ‘দিদির দূত’ অ্যাপের নামেই নামকরণ করা হয়েছে রাজ্যের শাসকদলের এই জনসংযোগ যাত্রার।
এ ব্যাপারে এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘দলের প্রচার কর্মসূচির সময় তৃণমূল নেতানেত্রীরা বিভিন্ন এলাকায় ‘দিদির দূত’ যানটিকে ব্যবহার করবেন।’ গত বুধবারই রায়গঞ্জের এক জনসভা থেকে বিজেপি–র ‘পরিবর্তন যাত্রা’ যার নাম আগে ‘পরিবর্তন রথযাত্রা’ ছিল, তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সুপ্রিমোর প্রশ্ন, ‘বিজেপি–র নেতারা কেন রথে থাকবে? তারা কি জগন্নাথ–বলরাম–সুভদ্রার থেকেও বড়? তা হলে কি বিজেপি নেতাদের এখন আমাদের পুজো করতে হবে?’ তাঁর মতে, ‘ধর্মের নামে অর্ধম করছে এরা। দেবতার রথ বিজেপি–র রথ হতে পারে না।’
যদিও বিজেপি–র অভিযোগ, তাদের প্রায় প্রতিটি প্রচার কর্মসূচিকে অনুসরণ করছে তৃণমূল। তাদের কটাক্ষ, বিজেপি–র ‘রথযাত্রা’কে নকল করে তৃণমূলের কোনও লাভ হবে না। রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের কথায়, ‘পরিবর্তন যাত্রার নকল করে এখন ‘দিদির দূত’ করেছে ওরা। কিন্তু এ সবে কোনও লাভ হবে না। দল ছেড়ে পালাচ্ছেন বিধায়ক, সাংসদরা। তৃণমূল এবার হারবেই।’
ইতিমধ্যে চারটি ‘পরিবর্তন যাত্রা’র সূচনা করে ফেলেছে বিজেপি, যা রাজ্যের বিভিন্ন বিধানসভা এলাকায় ঘুরছে। বিজেপি সূত্রে খবর, চলতি মাসের শেষের দিকেই পঞ্চম রথযাত্রা শুরু হয়ে যাবে। উল্লেখ্য, প্রখম তিনটি ‘পরিবর্তন যাত্রা’র সূচনা করে গিয়েছেন বিজেপি–র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। এবং সম্প্রতি কোচবিহার থেকে চতুর্থ রথযাত্রার সূচনা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
এদিকে, এদিনই দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক সভা থেকে ফের বহিরাগত ইসুতে সুর চড়িয়ছেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘বহিরাগত নেতাদের গুটখার থুতুতে বাংলার লোহায় জং ধরবে না।’ অভিষেক এদিন আরও বলেন, ‘এমন এক জন নারী যাঁর বিরুদ্ধে লড়াই করতে বিজেপি–র সর্বভারতীয় সভাপতি থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষমন্ত্রী, তাবড় তাবড় ক্যাবিনেট মন্ত্রী, সর্বভারতীয় স্তরের শয়ে শয়ে নেতা বাংলায় ক্যাম্প করে বসে আছে। বলছে, ওরা নাকি ডবল ইঞ্জিন সরকার করবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটা ইঞ্জিনের সঙ্গে মোকাবিলা করতে গিয়ে মাঠে ৫০০ ইঞ্জিন নামাতে হচ্ছে বিজেপি–কে।’
অন্যদিকে, গত আটদিনে লক্ষাধিক মানুষ ডাউনলোড করছেন তৃণমূলের জনসংযোগকারী অ্যাপ ‘দিদির দূত’। এই অ্যাপের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন বাংলার মানুষ। তৃণমূলনেত্রীর প্রতিটি কাজ, চিন্তাভাবনা ও অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকা যাবে এই অ্যাপের মাধ্যমে। পাশাপাশি লাইভ দেখা যাবে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিটি সভা। এই অ্যাপের মাধ্যমে রাজ্যের নতুন খবরাখবর, ফটো, ভিডিও পাবেন ব্যবহারকারীরা। তাঁরা তাঁদের মতামতও ‘দিদির দূত’–এর মতো জানাতে পারবেন।