এক পরিচিত নারীর অপরিচিত কাহিনী
এক পরিচিত নারীর অপরিচিত কাহিনী নিয়ে হাওড়া নাট্যজন শীঘ্রই মঞ্চস্থ করতে চলেছে তাদের নুতন প্রযোজনা নাট্যকার সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের নাটক “পাষাণকন্যা” এ নাটকে প্রাচীন ভারতীয় সমাজে নারীর অবস্থান ও শোষণের পরম্পরাকে তুলে ধরা হয়েছে। জোর কদমে চলছে এ নাটকের প্রস্তুতি। নাটকের নির্দেশক ও অভিনেত্রী মৌসুমী সাউ – এর মুখে শুনে নিলাম নুতন নাটক ” পাষাণ কন্যার ” কাহিনী। রামায়ণের এক অনবদ্য চরিত্র অহল্যা কে নিয়ে তৈরী হয়েছে এ নাটক।
সুপ্রাচীন কাল থেকেই রামায়ণ এবং মহাভারত – এই দুই মহাকাব্য আমাদের সভ্যতা, সংস্কৃতি এবং গনতন্ত্রকে সমৃদ্ধ করে এসেছে। ভারতীয় জনমানসে এই দুই মহাকাব্যের প্রভাব অসীম। এই বিষয় টিকে মাথায় রেখেই ড.নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী, চিত্তরঞ্জন মাইতি এবং গৌতম রায়ের বিভিন্ন রচনা থেকে সংগৃহীত তথ্যের মাধ্যমে ‘রামায়ণ’ – এর অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি অংশ থেকে কাহিনীসূত্র নিয়ে এই নাটক নির্মান করা হয়েছে।
মহর্ষি গৌতমের পতিব্রতা স্ত্রী অহল্যার করুন কাহিনী দীর্ঘদিন ধরেই ভারতীয় জনমানসে ভীষন জনপ্রিয়। দেবরাজ ইন্দ্রের ছলনা আর প্রেমের অভিনয়ে প্রতারিত হয়ে কি ভাবে অহল্যা তাকে দেহদান করে ঋষি গৌতমের কাছে শাপগ্রস্তা হয়েছিলেন এবং কি ভাবেই বা অবশেষে শ্রী রামচন্দ্রের স্পর্শে অহল্যার শাপমুক্তি ঘটেছিল, তা আমাদের সকলেরই অল্প বিস্তর জানা। কিন্তু এই নাটকটিতে সম্পূর্ণ অন্য একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে অহল্যার চরিত্রটি চিত্রায়িত করার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রায় – বৃদ্ধ, ঋষি গৌতমকে অহল্যার পতি হিসাবে নির্বাচিত করার পিছনে কোন বিশেষ কারণ ছিল কি? কেনই বা দেবরাজ ইন্দ্র ঋষি গৌতমের আশ্রমে বিদ্যাশিক্ষা করতে এসেছিলেন ? অহল্যা কি সত্যিই ইন্দ্রকে ভালবেসেছিল ? এক অন্তর্ভেদী দৃষ্টি নিয়ে এ নাটকের বিষয়বস্তুতে আধুনিক সভ্যতার আলোকে তৎকালীন ভারতের আর্থ-সামাজিক এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে বিশ্লেষণ করার প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি, প্রাচীন ভারতীয় সমাজে নারীর অবস্থান ও শোষনের পরম্পরাকেও আখ্যায়িত করার উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। নাটকটির মঞ্চ পরিকল্পনা করেছেন – হাওড়া নাট্যজন – এর প্রাণপুরুষ অজয় সাউ। রাজর্ষি চক্রবর্তীর আবহ, রণেন চক্রবর্তীর কোরিওগ্রাফ। পূর্ণশ্রী বিশ্বাসের পোশাক এবং সুশান্ত বাগের আলোক পরিকল্পনায় এ নাটক দর্শক হৃদয়ে স্থান করে নিতে পারবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।