শীঘ্রই ফের দিল্লিতে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করতে চলেছে বেজিং।
বিগত ১৫ মাস ধরে দিল্লিতে কোনও রাষ্ট্রদূত নেই চিনের। সীমান্ত সমস্য়ার আবহে এত দীর্ঘ সময় ধরে ভারতে চিনা রাষ্ট্রদূত না থাকার বিষয়টি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মত বিশ্লেষকদের। তবে নয়া বছরে সেই বিষয়টি বদলাতে চলেছে বলে জানা যাচ্ছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, শীঘ্রই ফের দিল্লিতে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করতে চলেছে বেজিং। জানা গিয়েছে, শি ফেইহং নামক কূটনীতিককে দিল্লিতে রাষ্ট্রদূত হিসেবে পাঠাতে পারে বেজিং। এর আগে তিনি আফগানিস্তানে চিনা রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন। এছাড়াও রোমানিয়াতেও চিনা রাষ্ট্রদূত থেকেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি চিনের বিদেশ মন্ত্রকের উপমন্ত্রী।
এদিকে রাষ্ট্রদূত নিয়োগের বিষয়টি জানা গেলেও এখনও রয়ে গিয়েছে অনেক ধোঁয়াশা। রাষ্ট্রদূত নিয়োগের আনুষ্ঠানিকতা এবং যাবতীয় নিয়মকানুন এখনও সম্পন্ন হয়নি। এই আবহে ঠিক কবে নাগাদ ফেইহং দিল্লিতে এসে নিজের দায়িত্ব বুঝে নেবেন, তাও স্পষ্ট নয়। উল্লেখ্য, এর আগে ভারতে চিনা রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন সান ওয়েইডং। তিনি ২০২২ সালের অক্টোবরে ভারত ছেড়েছিলেন। তবে এরপর থেকে আর নতুন করে কোনও রাষ্ট্রদূত বেজিং নিয়োগ করেনি। এদিকে চিনা রাষ্ট্রদূত দিল্লিতে এলে বিষয়টিকে আপাতত ভালো চোখেই দেখবে সাউথ ব্লক। তবে এতে সীমান্ত পরিস্থিতি যে শুধরে যাবে, এমন আশা করছে না ভারত।
২০২০ সালে লাদাখের গালওয়ানে সংঘর্ষ বেঁধেছিল ভারত ও চিনা সেনার। এরপরও আরও দু’বার নাকি চিনা সেনার সঙ্গে ভারতীয় সেনার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। এই তথ্য সম্প্রতি সামনে আসে। সেনার এক অনুষ্ঠানের থেকে বিষয়টি জানা গিয়েছিল। সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, গালওয়ানের সংঘর্ষের পর আরও যে দু’টি সংঘর্ষ হয়েছিল, সেগুলি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২ সালের নভেম্বরের মধ্যে কোনও এক সময়ে হয়েছিল। উল্লেখ্য, গালওয়ান সংঘর্ষের আগে থেকেই সীমান্ত নিয়ে চিনা সেনার সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। তবে তাতে কোনও সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসেনি। বরং চিনা সেনা সুযোগ বুঝে বারবারই আগ্রাসন দেখিয়েছে। শুধু লাদাখ নয়, উত্তরপূর্বে অরুণাচলের তাওয়াং সেক্টরেও স্থিতাবস্থা পরিবর্তন করেছে চিন। এর আগে ২০২২ সালের ৯ ডিসেম্বর অরুণাচলের তাওয়াঙে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করার চেষ্টা করেছিল চিনা সেনা। ভারতীয় জওয়ানরা চিনা সেনার সেই আগ্রাসনকে রুখে দিয়েছিল। সেই ক্ষেত্রেও সাহসী সৈনিকদের তাঁদের বীরত্বের জন্য পুরস্কৃত করা হয়েছিল। সেই সময় সংসদে দাঁড়িয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছিলেন, ইয়াংসে অঞ্চলে চিন একক ভাবে স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের চেষ্টা করেছিল। তবে ভারতীয় সেনা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে চিনা সেনাকে রুখে দিয়েছিল। সেই সংঘর্ষে দুই দেশেরই জওয়ানরা জখম হয়েছিলেন। এই আবহে দীর্ঘ সময় দিল্লিতে চিনের কোনও রাষ্ট্রদূত ছিলেন না। এমনকী সীমান্তে ভারত-চিন সামরিক স্তরের বৈঠকও হয়নি বহুদিন।