মমতা পণবন্দি হয়ে জঙ্গিদের সামনে বলিদানে প্রস্তুত ছিলেন! না জানা গল্প শোনালেন যশবন্ত
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পণবন্দি হতেও এগিয়ে গিয়েছিলেন। নিজের জীবনের বিনিময়ে সাধার মানুষের জীবন বাঁচাতে বলিদানের জন্য প্রস্তুত পর্যন্ত হয়ে গিয়েছিলেন। অতীতের সেই না জানা গল্প এতদিনে সামনে আনলেন যশবন্ত সিনহা। অটলবিহারী বাজপেয়ী ক্যাবিনেটের অর্থমন্ত্রী মমতার দলে যোগ দেওয়ার পরই ফাঁস করলেন সেদিনের কথা।
মমতা পণবন্দি হয়ে জঙ্গিদের সামনে বলিদানে প্রস্তুত ছিলেন!
কান্দাহারে ভারতীয় এয়ারলাইন্সের বিমান হাইজ্যাক
সেদিনের কথা আজ গল্প হয়ে গিয়েছে। সেটা ছিল ১৯৯৯ সাল। কান্দাহারে ভারতীয় এয়ারলাইন্সের বিমান হাইজ্যাক করা হয়েছিল। সেসময় কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাত্রীদের মুক্তি এবং আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা যশবন্ত সিনহা পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে এ কথা জানালেন।
মমতা কখনও নিজের জীবনের জন্য ভয় পান না
যশবন্ত সিনহা বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে বিমানযাত্রীদের মুক্তির জন্য অপহরণকারীদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। তিনি নিজে পণবন্দি হয়ে যেতে চেয়েছিলেন অপহরণকারী জঙ্গিদের সঙ্গে কথা বলতে। যশবন্ত সিনহা স্মরণ করিয়ে দেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনও নিজের জীবনের জন্য ভয় পান না।
বিজেপি ছাড়ার তিন বছর পর তৃণমূলে যোগ
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের জোট শরিক ছিলেন। হাইজ্যাকের সময় যশবন্ত সিনহা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ছিলেন। তিনি বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের তীব্র সমালোচক। তিনি ২০১৮ সালে বিজেপি ছাড়েন। তিন বছর পর এদিন তিনি তৃণমূলে যোগদান করেন।
১৯৯৯ সালে কান্দাহার হাইজ্যাকিং
১৯৯৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর ছ’জন জঙ্গি কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে একটি ভারতীয় বিমান এয়ারবাস এ-৩০০ (আইসি ৮১৪) হাইজ্যাক করে। দিল্লিগামী বিমানটিতে ১৭৮ জন যাত্রী এবং ১১ জন ক্রু ছিলেন। অপহরণকারীরা যাত্রীদের মুক্তির বিনিময়ে মাসুদ আজহারসহ তিন দণ্ডিত সন্ত্রাসীর মুক্তি দাবি করেছিল। অপহরণকারীরা ২৫ বছর বয়সী রিপন কাতিয়াল নামে এক যাত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে।
আট দিন ধরে বিমানটি ভারত, পাকিস্তান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে বেশ কয়েকটি বিমানবন্দরে নেমেছিল। ২৬ জন যাত্রীকে তাঁরা মুক্তি দিয়েছিল এবং রিপন কাতিলের দেহ নামিয়ে দিয়েছিল। তারপরে প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী বাকি যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিনজন বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এই আলোচনা আফগানিস্তানের কান্দাহার বিমানবন্দরে হয়েছিল, যেটি তালেবানদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল।