পশ্চিমবঙ্গের ১৫,০০০ গাঁটে ব্যথা ও হাড়ের সমস্যায় ভোগা রোগীর চিকিৎসায় আহমেদাবাদের শালবি হাসপাতাল
হাঁটু প্রতিস্থাপন এবং অস্থি রোগের চিকিৎসায় বিশ্ব বিখ্যাত আহমেদাবাদের শালবি হাসপাতাল এরাজ্যের ১৫,০০০ গাঁটে ব্যাথা ও জটিল হারের অসুখে ভোগা মানুষকে নিরাময় করে অভূতপূর্ব মাইলফলক স্থাপন করেছে। কলকাতা, হাওড়া, আসানসোল, শিলিগুড়ি, বহরমপুর, বর্ধমান এবং দুর্গাপুরের মত এ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসকারী বহু রোগী শালবি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে যান। পাশাপাশি প্রতিবেশী রাজ্যের জামশেদপুর, ভিলাই এবং ধানবাদের বহু রোগীও হাঁটু এবং হিপ প্রতিস্থাপন অপারেশনের জন্য সেখানে গিয়ে থাকেন। শালবির অস্থিরোগের বিশেষজ্ঞ শল্য চিকিৎসকরা কলকাতার ভবানীপুর এলাকার শান্তি ওয়েলনেস কেয়ারে দুপুর একটার সময় রোগীদের পরামর্শ দেন। ৬৩৫৭৩৯৫০০১ নম্বরে ফোন করে রোগীরা পরামর্শের জন্য নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারেন। ১৯৯৪ সালে আহমেদাবাদে বিশ্ব বিখ্যাত জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট সার্জন তথা বর্তমানে সংস্থার চেয়ারম্যান তথা ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডা: বিক্রম শাহ ৬ শয্যা বিশিষ্ট ছোট্ট হাসপাতালটি তৈরি করেন। তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্বে এই সময় এটি ১১ টি মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালের চেইনে পরিণত হয়েছে, যার বিস্তার দেশের আটটি শহর জুড়ে। সারাবিশ্বে এটি জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট এবং জটিল অস্ত্রোপচারের কেন্দ্র হিসেবে খ্যাত হয়েছে।
১৯৯৪ সালে যখন ডাক্তার বিক্রম শাহ শালবি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন তখন তার লক্ষ্য ছিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অস্থি সংক্রান্ত রোগের কার্যকরী চিকিৎসা,বিশেষ করে বয়স জনিত গেঁটেবাত উপশমের একটি কার্যকর পদ্ধতি মানুষের সামনে নিয়ে আসা। যদিও পশ্চিমি দেশগুলোতে সেসময় এধরণের অস্ত্রোপচার বহুল প্রচলিত ছিল, কিন্তু এদেশে এই চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা খুবই কম থাকার কারণে এধরণের অস্ত্রোপচার হতো না বললেই চলে। প্রথম বছরে ১৪ টি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সূচনা করেন,যা পরের বছর বেড়ে দাঁড়ায় ১০০। পরের বছর এই অঙ্কে আরও বড়সর বৃদ্ধি দেখা যায়। পরবর্তী বছরগুলোতে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে ডা: বিক্রম শাহ শুধু কাগজে কলমেই নয় সমস্ত চিকিৎসা জগতের কাছে ভারতের সেরা জয়েন্ট প্রতিস্থাপন সার্জন হিসেবে চিহ্নিত, যিনি গোটা বিশ্বে সর্বাধিক এ ধরণের অস্ত্রপচার করেছেন। তাঁরই নেতৃত্বে আজ শালবি হাসপাতাল বিশ্বের এক নম্বর জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট সেন্টারে পরিণত হয়েছে যেখানে প্রতি বছর ১০ হাজার অস্ত্রোপচার সংঘটিত হয়। আজকের তারিখ পর্যন্ত শালবি হাসপাতলে ১ লক্ষ ২৫ হাজারের বেশি জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট সার্জারি করা হয়েছে। এখানে মাথা থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত সমস্ত অস্থি রোগের চিকিৎসার সুবন্দোবস্ত রয়েছে। তাই শুধুমাত্র ভারত বর্ষ নয় গোটা বিশ্বে জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট এবং জটিল ও সংশোধন অস্ত্রোপচারের মূল কেন্দ্র হয়ে উঠেছে এটি।
বিশ্ব বিখ্যাত জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট সার্জন তথা শালবির চেয়ারম্যান তথা ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডা: বিক্রম শাহ বলেন,” গাঁটে ব্যথার চিকিৎসার জন্য পশ্চিমবঙ্গের মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে পেরে আমরা আনন্দিত। বিগত ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমরা এ রাজ্যের মানুষের গাঁটে ব্যথা ও জটিল অস্থি রোগের চিকিৎসা করছি। এখানকার মানুষকে যাতে পরামর্শ এবং প্রাথমিক পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য সুদূর আহমেদাবাদে ছুটে যেতে না হয় তা নিশ্চিত করতে কলকাতা এবং শিলিগুড়িতে দুটি পরামর্শ কেন্দ্র খুলেছি আমরা। শুধুমাত্র যাদের জটিল রোগ রয়েছে তাদেরই
আহমেদাবাদে অস্ত্রোপচারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। মৃদু এবং মাঝারি উপসর্গ বিশিষ্টদের কোনরকম ওষুধ ছাড়াই খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এবং ব্যায়ামের মাধ্যমে সুস্থ করে তোলা হয়। প্রতি সপ্তাহে আমাদের চিকিৎসকেরা কলকাতায় আসেন মাসে একবার করে যান শিলিগুড়িতে। পাশাপাশি সময় সময় এখানে বিনামূল্যে পরামর্শ শিবিরেরও আয়োজন করা হয়।”
জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট সার্জারি সম্পর্কে প্রচলিত প্রবাদ ও তার পিছনের প্রকৃত সত্য
প্রথম প্রবাদ : সমস্ত হাঁটু প্রতিস্থাপন শুধুমাত্র ১০ বছর স্থায়ী হয়।
সত্য: বর্তমানে সমস্ত হাঁটু প্রতিস্থাপনের মেয়াদ ২০ থেকে ২৫ বছর।
দ্বিতীয় প্রবাদ: হাঁটুর অস্ত্রোপচার অত্যন্ত বেদনাদায়ক
সত্য: শূন্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে সামান্য ব্যথায় অস্ত্রপচার সম্ভব এবং সেটাও ওষুধের মাধ্যমে উপশম করা যায়।
তৃতীয় প্রবাদ: বয়স্কদের অস্ত্রোপচার সম্ভব নয়।
সত্য: শারীরিক সুস্থতা বয়সের থেকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ এবং অস্ত্রোপচারের পর দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠার প্রধান মাপকাঠি।