জামাই ষষ্ঠীর আসলে ঠিক কী কী নিয়ম থাকে?
জামাই ষষ্ঠী মানেই কিন্তু মেয়ের বাপের বাড়ি ফেরার পালা। সারাবছর টুকটাক তার আনাগোনা লেগে থাকলেও বিশেষ করে এইদিন জামাই মেয়েকে একসঙ্গে পাওয়াই কিন্তু আসল উপলক্ষ। হরেক রকম রান্না বান্না তো রইলই তবে তার সঙ্গে যাবতীয় মরশুমি ফল হিমসাগর আম, লিচু, কাঠাল, জাম, গোলাপজামের সম্ভার – জামাই আদরে কোনভাবেই খামতি রাখেন না শাশুড়িরা।
জামাই ষষ্ঠীর আসলে ঠিক কী কী নিয়ম থাকে?
এই ষষ্ঠীর ক্ষেত্রে দেশ বিভেদে নিয়ম একটু আলাদা হয়। অনেক বাড়িতে নিজেদের সন্তানের মঙ্গল কামনায় বিয়ের আগেও কিন্তু মায়েরা ষষ্ঠী পালন করে থাকেন। আবার কিছু দেশে জামাই এর মঙ্গল কামনায় এই ব্রত করা হয়। একটি ফুলের তোড়া বাঁধা হয়, যাকে ‘ষষ্ঠীর ডোর’ বলা হয়ে থাকে। বাঁশের খোল, করমচা, কমলা রঙের ফুল, আতপ চাল, দূর্বা, হলুদ সুতো দিয়ে বাঁধা হয়। সেটিকে ভিজিয়ে রাখা হয় গঙ্গা জলের পাত্রে। এটি দিয়েও মাথায় জল ছেটানোর নিয়ম রয়েছে। হলুদ মা ষষ্ঠীর প্রিয় রং, এ কারণেই অনেকে হলুদ ছেটানো পাখাও ব্যবহার করেন।
আবার সবথেকে সাধারণ যে নিয়মটি চোখে পড়ে সেটি হল পাখায় জল ফেলে সেটিকে দিয়ে হাওয়া করা। জামাইয়ের হাতে ফলের ঝুড়ি এবং শাশুড়ি মা পাখা দিয়ে হাওয়া করছেন। এটিকে ষষ্ঠীর শান্তভাবের আখ্যা দেওয়া হয়। লৌকিক আচার বলছে, ষষ্ঠী সন্তান সন্ততির দেবী। আর মেয়ের শীঘ্র সন্তান কামনায় এই ষষ্ঠী পালন করা হয়।
মা কিংবা শাশুড়ি মায়েদের নিয়ম মেনে উপবাস থাকতে হয়। সঙ্গে সন্তান এবং জামাই মেয়েরও উপোষ থাকার নিয়ম রয়েছে। অনেক বাড়িতেই নিয়ম রয়েছে ষষ্ঠীর ব্রত কিংবা পুজো হয়ে গেলেও মায়েরা এদিন ফলাহার কিংবা দই চিড়ে খান। আবার জামাইদের-কেও দই চিড়ে খাওয়ানো হয়।
এবছরের জামাই ষষ্ঠীর সময়?
সাধারণত সকালের দিকে এই ব্রত পালনের রীতি থাকলেও এবছরের ষষ্ঠীর নির্দিষ্ট নির্ঘণ্ট দুপুরের দিকে। পঞ্জিকা অনুসারে, ২১শে জৈষ্ঠ্য দুপুর ২টো ২২ থেকে পরেরদিন অর্থাৎ ২২ শে জৈষ্ঠ্য সন্ধ্যে ৬টা ৩২ পর্যন্ত।
তবে দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন এসেছে অনেককিছুতেই। বেশিরভাগ জামাইরা এখন কাজের চাপে আসতে পারেন না কিংবা দূরে থাকেন। অনেকেই অনলাইন মাধ্যমে জামাই ষষ্ঠী সারেন। এখন বেশিরভাগ বাড়িতেই দেখা যায়, খাবার দাবারের বিরাট আয়োজন। নানা পদের খাবার, মিষ্টি তো রয়েছেই। উপহার হিসেবে বস্ত্র কিংবা পছন্দের জিনিস দেওয়া হয়ে থাকে। খাওয়াদাওয়া তুঙ্গে থাকলেও নিয়মে যেন গাফিলতি না থাকে। দেখবেন, জামাই আদরে যেন খামতি না হয়!