+91 9330828434 +91 9804424251 banglalivenews@gmail.com

মমতাকে কটাক্ষ মোদীর, আপনাকে সবাই দিদি ভেবেছিল, আপনি শুধু একজন ভাইপোর পিসি হয়ে গেলেন !

নিজস্ব সংবাদদাতা - March 8, 2021 12:13 am - কলকাতা

মমতাকে কটাক্ষ মোদীর, আপনাকে সবাই দিদি ভেবেছিল, আপনি শুধু একজন ভাইপোর পিসি হয়ে গেলেন !

নন্দীগ্রামে মমতা বুন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়েই ছাড়বেন। ব্রিগেডে সভার শুরুতেই জানিয়ে দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তবে শুভেন্দুর ঘোষণা যেখানে হুঁশিয়ারি ছিল, নরেন্দ্র মোদী তা তাকে কটাক্ষের পর্যায়ে নিয়ে গেলেন। শুভেন্দুর ‘গড়’ নন্দীগ্রামে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে তৃণমূল নেত্রীকে তীব্র কটাক্ষ করলেন তিনি। পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ই-স্কুটি চেপে মমতার নবান্ন যাওয়াকে নন্দীগ্রামের সঙ্গে জুড়ে দিলেন। মোদী বলেন, ‘‘কিছু দিন আগে স্কুটি সামলাচ্ছিলেন দিদি। সবাই ভয় পাচ্ছিলেন, আপনি পড়ে গিয়ে আঘাত না পান। ভাগ্যিস পড়ে যাননি। নইলে যে রাজ্যে স্কুটি তৈরি হয়েছে, সেই রাজ্যকেই শত্রুতা বানিয়ে ফেলতেন। তাই ভাল হয়েছে পড়ে যাননি। কিন্তু ভবানীপুর যেতে যেতে নন্দীগ্রামের দিকে কী করে ঘুরে গেল স্কুটি? আমি চাই না আপনি পড়ে গিয়ে আঘাত পান। কিন্তু স্কুটি যখন নন্দীগ্রামেই গিয়ে পড়েছে, তখন আমরা আর কী করব।‘‘

দিদি হিসেবে ১০ বছর আগে মমতাকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলেন বাংলার মানুষ। কিন্তু মমতা শুধু এক জন ভাইপোর পিসি হয়ে রয়ে গিয়েছেন বলেও কটাক্ষ করেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘১০ বছর পর মানুষ জবাব চাইছেন। দিদি হিসেবে আপনাকে বেছে নিয়েছিলেন সকলে। কিন্তু আপনি নিজেকে শুধু ভাইপোর পিসি হিসেবেই সীমাবদ্ধ করে রেখেছিলেন।’

’মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এবং তৃণমূলের ছড়ানো পাঁকেই আজ বাংলায় পদ্ম গজিয়ে উঠেছে বলেও মন্তব্য করেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘কখনও আমাকে রাবণ, কখনও দৈত্য, কখনও গুন্ডা বলছেন দিদি। এত রাগ কেন দিদি? আপনার দল এবং আপনার সরকারের ছড়ানো পাঁকেই আজ বাংলায় পদ্ম ফুটছে। গণতন্ত্রের নামে বাংলায় লুঠতন্ত্রকে প্রশ্রয় দিয়েছেন, জাত-ধর্মের নামে বিভেদের রাজনীতি করেছেন, তাই আজ বাংলায় পদ্ম ফুটছে। দিদিকে অনেক দিন ধরে চিনি। বামপন্থীদের বিরুদ্ধে লড়া দিদি এমন ছিলেন না। কিন্তু আঝ দিদির রিমোট কন্ট্রোল অন্যের হাতে।’’

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে এত বড় সভা দেখিনি। হেলিকপ্টার থেকে দেখছিলাম। ময়দানে জায়গা নেই। রাস্তায় লোক উপচে পড়ছে। মনে হয় না ওঁরা পৌঁছতে পারবেন। সকলকে প্রণাম জানাই। বাংলার মাটি থেকেই ভারতীয় সংস্কৃতির বিকাশ, বাংলার মাটি থেকেই স্বাধীনতা আন্দোলনের শুরু। বাংলার মহাপুরুষরা এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত ভাবনাকে মজবুত করেছিলেন।

তিনি বলেন, আজ এই ব্রিগেডের মাঠ থেকেই বাংলায় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে ।মার্কস, লেনিনের মতবাদ বামেদের আদর্শ। তৃণমূলের আদর্শ কংগ্রেস। কিন্তু বিজেপি শ্যামাপ্রসাদের আদর্শে দীক্ষিত। বিজেপির ডিএনএ-তে বাংলার অস্তিত্ব রয়েছে। কারা বহিরাগত আপনারাই ভাবুন।

কখনও আমাকে রাবণ, কখনও দৈত্য, কখনও গুন্ডা বলছেন দিদি। এত রাগ কেন দিদি? আপনার দল এবং আপনার সরকারের ছড়ানো পাঁকেই আজ বাংলায় পদ্ম ফুটছে। গণতন্ত্রের নামে বাংলায় লুঠতন্ত্রকে প্রশ্রয় দিয়েছেন, জাত-ধর্মের নামে বিভেদের রাজনীতি করেছেন, তাই আজ বাংলায় পদ্ম ফুটছে। দিদিকে অনেক দিন ধরে চিনি। বামপন্থীদের বিরুদ্ধে লড়া দিদি এমন ছিলেন না। কিন্তু আজ দিদির রিমোট কন্ট্রোল অন্যের হাতে। দিদি নিজে কাজ করছেন না, কাউকে করতেও দিচ্ছেন না।

আন্তর্জাতিক নারী দিবসের এক দিন আগে বাংলার মাটিকে প্রণাম করি। কারণ এখান থেকেই সারদা দেবী, মাতঙ্গিনী হাজরা, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের মতো মহীয়সী নারী পেয়েছে দেশ। কিন্তু এখানে সরাকরি প্রকল্পেও একজন ‘মালকিন’-এর নাম।

শুনলেন তো দিদি! এটা বাংলার মানুষের আওয়াজ। ১০ বছর পর মানুষ জানতে চাইছেন, দিদি হিসেবে আপনাকে বেছে নিয়েছিলেন সকলে। কিন্তু আপনি নিজেকে শুধু ভাইপোর পিসি হয়ে রয়েছেন। কংগ্রেসের পরিবারতন্ত্রের পথেই আপনি কেন হাঁটলেন।

গোটা বাংলা এক স্বরে বলছে, আর নয় অন্যায়। তৃণমূল সরকারের আয়ু কমে আসছে। আজ গোটা দেশ শুনুক, দুর্নীতি আর নয়, তোলাবাজি আর নয়, কাটমানি আর নয়, সিন্ডিকেট আর নয়, বেকারত্ব আর নয়, হিংসা আর নয়, আতঙ্ক আর নয়, তুষ্টিকরণ আর নয়, অন্যায় আর নয়। এত জোরে বলুন যাতে আপনাদের রাগ, ক্ষোভ দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।

স্বাধীনতার লড়াইকে ভিত্তি করে কংগ্রেস ক্ষমতায় এসেছিল। তার পর কিছু দিন কাজ হয়েছিল। তার পর থেকেই রাজনীতির খেলা শুরু হয়। বামপন্থীরা অত্যাচার চালাতে শুরু করে। বামপন্থীরা একসময় বলতেন কংগ্রেসের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও। এই স্লোগানবাজির দৌলতেই ক্ষমতা দখল করে। ৩ দশক ক্ষমতায় ছিল। আমি জানতে চাই, আজ সেই কালো হাতের কী হল। কালো হাত ফরসা হয়ে গেল কী ভাবে। যে হাতকে বামপন্থীরা কালো ভাবতেন, আজ তা সাদা হল কী ভাবে। যে হাত গুঁড়িয়ে দিতে চাইতেন, আজ সেই হাত ধরেই এগোচ্ছেন। বামেদের বিরুদ্ধে পরিবর্তনের স্লোগান তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মা-মাটি-মানুষের জন্য কাজ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই প্রতিশ্রুতি রেখেছেন কি?

জাতীয় শিক্ষা নীতি বাংলায় প্রণয়ণ করা হবে। বাংলা ভাষায় ইঞ্জিনিয়ারিং, ডাক্তারি পড়ানো হবে। প্রান্তিক পড়ুয়ারা ইংরেজি না জানলেও ইঞ্জিনিয়ারিং, ডাক্তারি পড়তে পারবেন। আমরা শুধুমাত্র ক্ষমতাবদল চাই না, বাংলায় উন্নয়নকেন্দ্রিক সরকার গড়তে চাই। ৫টা বছর নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আ সময় নষ্ট করা যাবে না। আসল পরিবর্তন আনতে হবে। বাংলার মানুষকে মনে রাখতে হবে, কী ভাবে বার বার তাঁদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে।

রাজ্য সরকারের কমিশনবাজির জেরে বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকার উন্নয়ন আটকে রয়েছে। কলকাতার স্মার্টসিটি প্রকল্প আনবে বিজেপি। নতুন উড়ালপুল গড়া হবে। ঝুপড়িবাসীদের পাকা বাড়ি করে দেওয়া হবে। ঠেলাওয়ালাদের স্বনিধি যোজনার আওতায় আনা হবে। কলকাতার সঙ্গেই বাংলার অন্য শহরেও আত্মনির্ভরতার লক্ষ্য নিয়ে এগোব আমরা। যাতে পড়াশোনা, রোজগার এবং প্রবীণদের জন্য ওষুধের বন্দোবস্ত করা যায়। বাংলায় নতুন শিল্প আসবে। বাংলায় আসল পরিবর্তন আনতে হলে গ্রাম পঞ্চায়েত, নগর নিগম এবং নগর পালিকাদের পারদর্শিতা ততটাই জরুরি। বাংলায় যে ভাবে গণতন্ত্রকে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, বিজেপি তার পুনর্নির্মাণ করবে।

বাংলার পুনর্নির্মাণ, সংস্কৃতির রক্ষা, শিল্প তৈরির প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।বাংলার মানুষের উন্নতির জন্য ২৪ ঘণ্টা কাজ করব।প্রতি মুহূর্তে আপনাদের জন্য বাঁচব, আপনাদের সেবা করব। প্রতি মুহূর্তে কাজের মধ্যে দিয়ে আপনাদের মন জিতব।

আগামী ৫ বছরে বাংলায় যে বিকাশ ঘটবে, তাতে পরবর্তী ২৫ বছরের ভিত তৈরি হবে। বাংলার উনন্য়নের কথা ভেবে ভোট দিন। ২০৪৭ সালে স্বাধীনতার ১০০তম পূর্তিতে বাংলা আবার ফের দেশের মধ্যে শীর্ষস্থান দখল করবে। মাছ হোক বা ভাত, বন্দর হোক বা বাণিজ্য, বাংলার মাটিতে সবকিছু রয়েছে। সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগোতে হবে। আমাদের এনডিএ সরকার সেই লক্ষ্য নিয়েই এগোবে। কলকাতা সিটি অব জয়। কলকাতার কাছে সমৃদ্ধশালী অতীত এবং সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ রয়েছে। কলকাতার সংস্কৃতিকে সুরক্ষিত রেখে তাকে ভবিষ্যতের শহর বানানোর সামনে কোনও প্রতিবন্ধকতা নেই।

ব্রিটিশ শাসকরা বাংলায় দমনপীড়ন চালিয়েছিল। বাংলার মানুষের কাছ থেকে আর কেউ অধিকার ছিনিয়ে নিতে পারবে না। বাংলার মানুষকে কথা দিচ্ছি, যআ কিছু ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে, সব ফেরত দেব। স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষে নতুন সঙ্কল্প নিয়ে এগোবে বাংলা। জ্ঞান-বিজ্ঞানে বাংলার অনেক অবদান। বাংলার মানুষ পরিবর্তনের আশা ছাড়েননি। বাংলা উন্নতি চায়, শান্তি চায়।

আজ বাংলার ছেলে মিঠুন চক্রবর্তী রয়েছেন আমাদের সঙ্গে। ওঁর সঙ্ঘর্ষ এবং উত্থান সম্পর্কে সকলেই অবগত। আজ পরিবর্তনের জন্যই এসেছেন মানুষ। বাংলার মানুষ দিদির উপর ভরসা করেছিলেন। কিন্তু দিদি এবং তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা সেই বিশ্বাস ভেঙে দিয়েছেন। বাংলার মানুষের বিশ্বাসভঙ্গ করেছেন দিদি। মা-বোনেদের উপর অকথ্য অত্যাচার হয়েছে। বাংলার মানুষ তবু ভেঙে পড়েননি। বরং পরিবর্তন চাইছেন তাঁরা। বাংলার উন্নতি চাইছেন।


আরও পড়ুন:

Follow Bangla Live on Facebook

Follow Bangla Live on YouTube