মণিপুর জাতিদাঙ্গা নিয়ে এবার ‘গোপন রিপোর্ট’ চাইল শীর্ষ আদালত।
মণিপুর জাতিদাঙ্গা নিয়ে এবার ‘গোপন রিপোর্ট’ চাইল শীর্ষ আদালত। টাইমস অফ ইন্ডিয়া-এ প্রকাশিত খবর অনুসারে, সোমবার মণিপুর সরকারের কাছে এই রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। মুখবন্ধ খামে আদালতে সেই রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের কড়া নির্দেশ, মণিপুরে যে জাতিদাঙ্গা চলছে, তার ফলে কত সম্পত্তিহানির ঘটনা ঘটেছে, তা বিস্তারিতভাবে আদালতকে জানাতে হবে।
শীর্ষ আদালত নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেছে, জাতিদাঙ্গা চলাকালীন মণিপুরে কতগুলি বাড়ি বা বহুতল আগুনে পুড়ে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে, কতগুলি বাড়ি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কতগুলি বাড়িতে এবং কোথায় কোথায় লুটপাট চালানো হয়েছে, সেই লুট হওয়া সম্পদের পরিমাণ কত, এই সময়ের মধ্যে কতগুলি অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে এবং কত সম্পত্তি দখল করে নেওয়া হয়েছে – এই সমস্ত কিছুর বিস্তারিত তথ্য আদালতে ‘গোপন তথ্য’ হিসাবে জমা করতে হবে রাজ্য সরকারকে।
এখানেই শেষ নয়। মণিপুর দাঙ্গায় কত নাগরিক ক্ষতিগ্রস্ত এবং আক্রান্ত হয়েছেন, তারও একটা হিসাব তলব করেছে সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সংশ্লিষ্ট রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার সময় প্রত্যেকটি ঘটনার ক্ষেত্রে সেই সম্পত্তির প্রকৃত মালিকদের নাম ও তাঁদের ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।
পাশাপাশি, সেইসব সম্পত্তি বর্তমানে কাদের দখলে রয়েছে, তাদেরও নাম ও ঠিকানা শীর্ষ আদালতকে পূর্ণাঙ্গভাবে জানাতে হবে।
একইসঙ্গে, রাজ্য সরকারের কাছে সুপ্রিম কোর্ট জানতে চেয়েছে, জাতিদাঙ্গার সুবিধা নিয়ে যারা এই সময়ের মধ্যে মণিপুরে অনুপ্রবেশ করেছে এবং অন্যের সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কী পদক্ষেপ করেছে? তাদের বিরুদ্ধে আদৌ কি আইন অনুসারে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? সেই সংক্রান্ত সমস্ত তথ্যও সংশ্লিষ্ট গোপন রিপোর্টে যুক্ত করতে হবে।
প্রসঙ্গত, মণিপুর দাঙ্গা নিয়ে এর আগেও একাধিকবার প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকে। বিজেপি-বিরোধীদের প্রশ্ন, কেন মণিপুরে একবারও যাচ্ছেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী? মণিপুর ইস্যুতে লাগাতার সংসদেও সরকার পক্ষকে কোণঠাসা করেছে বিরোধীরা।
এরই মধ্যে সরকারের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, অরুণাচলপ্রদেশে ভারত-মায়ানমার সীমান্তে ৮০ কিলোমিটারেরও বেশি এলাকা কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে ফেলা হবে।
সরকারের বক্তব্য, মায়ানমারের অশান্ত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতেও অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এমনকী, মণিপুর জাতিদাঙ্গার নেপথ্যেও এই ধরনের বিদেশি ইন্ধন ও ষড়যন্ত্র কাজ করছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
এই প্রেক্ষাপটে মণিপুর নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের তথ্য-তলব নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।