একুশের ভোটের আগেই কি চূড়ান্ত ছিল মুকুলের ঘরে ফেরা!
মুকুল রায় চার বছর পর ফিরে গেলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। বেশ কিছুদিন ধরেই জল্পনা চলছিল তাঁর ঘরওয়াপসি নিয়ে। সেই জল্পনার অবসান হল। কিন্তু মুকুলের ঘরে ফেরা কি চূড়ান্ত ছিল একুশের নির্বাচনের আগে থেকেই! মুকুল রায়ের হঠাৎ নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানায় বিরত থাকা সেই ইঙ্গিত করছিল তাঁর ফেরার।
প্রচারেও ছিলেন না, নিশানাতেও ছিলেন না
মুকুল রায় ২০১৭ সালের নভেম্বরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েই আক্রণ শানিয়ে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বাদ যাননি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু একুশের গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের আগে থেকেই। মুকুল প্রচারেও ছিলেন না, তৃণমূলকে নিশানাতেও ছিলেন না। তাই মুকুল রায়কে নিয়ে জল্পনা নিছক ছিল না।
মুকুলকে শুভেন্দুর থেকে ভালো বলে বিবৃতি মমতার
একুশের নির্বাচন চলাকালীন মুকুল রায়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুকুলের নির্বাচনের আগে মমতার এই প্রশংসা ছিল বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। মমতা বলেন, ‘মুকুল শুভেন্দুর মতো অত খারাপ নয়। মুকুল বেচারকে কৃষ্ণনগরে প্রার্থী করেছে বিজেপি। বেচারা মুকুল!’ মমতার এই বিবৃতির পর রাজনৈতিক মহল মনে করেছিল মুকুল রায়ের তৃণমূলে ফেরা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।
ভোটের মাঝেই জায়গা ছাড়ার বার্তা দিয়েছিলেন মুকুল
শুধু মমতার বিবৃতিই নয়, প্রকাশ্য মঞ্চে মুকুল রায়ের বার্তাও ছিল যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। শুভেন্দু-রাজীবের মঞ্চে মুকুল বলেছিলেন, জায়গা ছেড়ে দিতে জানতে হয়। কোন সময় জায়গা ছাড়তে হয় তা সবাই জানে না, কিন্তু আমি জানি। তাঁর এই জায়গা ছাড়ার বার্তা নিয়ে কম সমালোচনা হয়নি। এই কথায় সুস্পষ্ট বিজেপিতে তিনি সুখে ছিলেন না।
এখানেই শেষ নয়, ভোটে জেতার পর মুকুল রায় প্রথমবার বিধানসভায় পা দিয়েই জল্পনা বাড়িয়েছিলেন। বলেছিলেন, কিছু কিছু সময় নীরব থাকতে হয়। সময় হলেই তিনি মুখ খুলবেন। মৌনী থেকেও তিনি অনেক কথা বলে দিয়েছিলেন সেদিন। তাঁর সেই বিবৃতিতেও তৃণমূলে ফেরার ইঙ্গিত ছিল সুস্পষ্ট।
মুকুলকে তৃণমূলে যোগদান করিয়ে মমতার বার্তা
এদিন তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ভোটের আগে যাঁরা দলকে বিপদে ফেলেছিলেন, সেইসব গদ্দারদের দলে ফেরাব না। আবার তাঁদের মধ্যেও দু-ভাগ রয়েছে, চরমপন্থী আর নরমপন্থী। চরমপন্থীদের ফেরানোর কোনও প্রশ্নই নেই। আর মুকুল রায় তো কোনও দলেই পড়ে না। কারণ মুকুল ভোটের আগে দল ছাড়েননি, আর ভোটের সময়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে একটা কথাও বলেননি।