নবান্ন অভিযানে ‘পুলিশের লাঠিচার্জে’ গুরুতর জখম বাম যুব কর্মীর মৃত্যু হল
নবান্ন অভিযানে গুরুতর জখম হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন এক বাম যুব কর্মী। সোমবার সকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন তিনি। তাঁর চিকিৎসার দায়িত্বে তাকা বাম নেতা ডাঃ ফুয়াদ হালিম সাফ জানিয়েছেন, পুলিশের বেপরোয়া মারধরের জেরেই মৃত্যু হয়েছে মইদুল ইসলাম মিদ্দার (৩১)। ইতিমধ্যে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে পুলিশে। ফুয়াদ হালিমের দাবি, ময়নাতদন্তের পরই সবকিছু সামনে আসবে।
১১ তারিখে নবান্ন অভিযান গুরুতর আহত হন বাঁকুড়ার কোতুলপুরের বাসিন্দা মইদুল। সেদিনই তাঁকে ভর্তি করা হয় কলকাতার ক্যামাক স্ট্রিটের লাইফ লাইন নার্সিংহোমে। সিপিএম নেতা তথা চিকিৎসক ফুয়াদ হালিমের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন বাঁকুড়া জেলার কোতুলপুর লোকাল কমিটির এই বাম কর্মী। ফুয়াদ হালিম ছাড়া অন্য চিকিসকরা জানিয়েছেন, মৃতের শরীরে বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। লাঠির গুরুতর আঘাত ছিল। চিকিৎসারত অবস্থায় এদিন সকালে মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের।
মৃত্যুর কারণ হিসেবে এদিন চিকিৎসক ফুয়াদ হালিম বলেন, ‘ওই বাম যুব কর্মীকে যেভাবে মারধর করা হয়েছে তার জেরেই এই ঘটনা। পুলিশ লাঠি দিয়ে সারা শরীরে বেপরোয়াভাবে মেরেছে তাঁকে। এই মারার ফলে ওঁর পেশির ভেতরে যে ক্ষত হয় তাতে প্রচুর প্রোটিন শরীর থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। প্রোটিন বেরিয়ে যাওয়ায় ওঁর কিডনি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ডাক্তারি পরিভাষায় যাকে বলে অ্যাকিউট কিডনি ইনজিওরি। এতে শরীরে ইউরিয়া, ক্রিয়েটিনিন মারাত্মক বাড়ে। এই পরিস্থিতির মধ্যে ওঁর ফুসফুসেও জল জমতে শুরু করে। ১৩ তারিখ কিডনির সমস্যা সামনে আসে। রবিবার মইদুলের শরীরের আরও অবনতি হয়। রাতের দিকে সামান্য উন্নতি হয়েছিল। কিন্তু আজ সকালে হঠাৎ একটা কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আমরা কমরেডকে হারিয়েছি।’
ফুয়াদ হালিমের কথায়, ‘৩১ বছরের ছেলের হঠাৎ কিডনি বিকল হয়ে গেল— এটা মারধর ছাড়া অন্য কোনও কারণে হতে পারে না। ইতিমধ্যে আমরা পুলিশকে সবটা জানিয়েছি। পুলিশ এসে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। একটা এফআইআরও নথিভুক্ত করা হয়েছে। আশা করছি, মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হবে। আর তাতেই পুরো ব্যাপারটা পরিষ্কার করে সামনে আসবে।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আর এক বাম যুব কর্মী বলছিলেন, ‘ডোরিনা ক্রসিংয়ের সামনে পুলিশ আমাদের মিছিল আটকানোর সাথে সাথেই লাঠিচার্জ করতে শুরু করে। সঙ্গে ছোঁড়া হয় টিয়ার গ্যাস, জলকামান। সুস্থ, সবল মইদুলকে বিভৎসভাবে মারে পুলিশ। ও রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে। আমরা এ ঘটনার তীব্র ধিক্কার জানাই।