নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ছদ্মবেশে তাঁর মানহানি করা হয়েছে- অভিজিত গাঙ্গুলি
কমিশনারের কিছু অফিসারেরা প্রভাবিত হয়েছেন। পার্সোনাল ভিডিও কনফারেন্সের অনুরোধ না শুনে তারা তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন। সাধারণভাবে তাঁর মনে হচ্ছে, কিছু অফিসার কোনও ভাবে প্রভাবিত হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি অনেক দূর যাবেন বলেও জানিয়েছেন তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এই কথা বলে, জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সেন্সরকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তিনি।
তমলুকের বিজেপি প্রার্থী বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ তিনি পড়ে দেখেছেন। সেই নির্দেশে ছদ্মবেশে তাঁর মানহানি করা হয়েছে। তিনি সেই নির্দেশকে ভেবে দেখার জন্য আবেদন করেছেন নির্বাচন কমিশনের কাছে। তারা কী করেন, এখন সেটা দেখতে হবে, বলেছেন তিনি।
মানহানি হয়েছে
প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলি বলেন, নির্বাচন কমিশন আইনের তৈরি একটা সংস্থা। সংবিধানের ওপরে কিছু নয়। তারা এই আদেশটা ওয়েবসাইটে তুলে তাঁর যে সম্মানহানি করেছে, তার আইনি দিকটাও দেখছেন তিনি। তবে এখনই বিশদে কিছু এব্যাপারে বলছেন না, ভবিষ্যতে বলবেন।
মনে সন্দেহ তৈরি হয়েছে
অভিজিৎ গাঙ্গুলি বলেছেন, তাঁর সম্পর্কে যে আদেশ দেওয়া হয়েছে সেটা নিয়ে কিছুটা সন্দেহ তৈরি হয়েছে। প্রথমে তাঁকে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল আর মঙ্গলবার একটা আদেশ দেওয়া হয়েছে। আগে যে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল সেখানে কতগুলো মন্তব্য করা হয়েছিল তাঁরই (অভিজিৎ) বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে। সেই মন্তব্য গুলো না শুনে যেভাবে আদেশ দেওয়া হয়েছে, তাতে তাঁর মনে সন্দেহ জেগেছে।
অফিসাররা প্রভাবিত হয়ে থাকতে পারেন
তিনি বলেন, প্রথমে আইনজীবী, পরে বিচারপতি হিসেবে অনেক শোকজের নোটিশ তিনি দেখেছেন। কিন্তু এভাবে কোনও নোটিশ দেখেননি। তবে পুরো কমিশন নয়, কিছু অফিসার প্রভাবিত হয়ে থাকতে পারেন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
কমিশনারকে দেওয়া তাঁর চিঠিতে তিনি বলেছেন, প্রচারের মধ্যে রয়েছেন। ফলে খুব বিশদে লিখতে পারছেন না। যদি প্রয়োজন হয় তিনি একটা সাপ্লিমেন্টারি রিপ্লাই দিতে চান। একটা পার্সোনাল হেয়ারিং-এর আবেদনও জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে কোনও সুযোগ দেওয়া হয়নি।
এদিন অভিজিৎ গাঙ্গুলি আরও বলেছেন, তমলুক লোকসভার বেশ কিছু জায়গা প্রচারে পৌঁছনো যায়নি। সেখানে দলের কর্মীরাই প্রচার করছেন। ফলে তিনি না থাকলেও প্রচার চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
কমিশনকে হুঁশিয়ারি
কমিশনের মন্তব্যকে যে কারণে তিনি চ্যালেঞ্জ করতে চাইছেন, তা হল, তাঁর বিরুদ্ধে যে মন্তব্যগুলি করা হয়েছে সেগুলিকে তিনি মানহানিকর বলে মনে করছেন। যে আদেশ কমিশনারের তরফ থেকে দেওয়া হয়েছে সেগুলো মানবেন, তবে সেখানে যে মন্তব্যগুলো করা হয়েছে সেগুলো নিয়ে অনেক দূর যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অভিজিৎ গাঙ্গুলি।
কী বলছেন শুভেন্দু
এদিন কমিশনের নির্দেশ প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আগে জারি করা উচিত নির্বাচন কমিশনের। তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে সন্দেশখালির মহিলাদের রেটের কথা বলেছেন, তার ক্ষেত্রে কেন অ্যাকশন হয় না? মহিষাদলে তৃণমূলের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাপ-মেটা-গদ্দার মন্তব্য তুলে ধরেন তিনি।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিজে থেকে কিছু বলেননি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথার প্রত্যুত্তরে তিনি ওই উক্তি করেন। ভারত সেবাশ্রম খারাপ, রামকৃষ্ণ মিশন খারাপ, এসব শুনেও নির্বাচন কমিশন চুপ করে রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। শুভেন্দু অধিকারীর প্রশ্ন কমিশন কি তখন ঘুমোয়? মা-বেটার জন্য এক রকম আইন আর অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্য কি অন্য রকম আইন?