মুর্শিদাবাদের জাকির হোসেন ইনস্টিটিউট অফ ফার্মেসির হস্টেলে উদ্ধার পড়ুয়ার দেহ
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় যখন গোটা রাজ্য জুড়ে ক্ষোভের আগুন জ্বলছে তারমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থানার অন্তর্গত জাকির হোসেন ইনস্টিটিউট অফ ফার্মেসি থেকে এক প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা।
ছাত্র মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে গত মঙ্গলবার কলেজের হোস্টেলের একটি ঘরে। তবে মৃতের পরিবারের অভিযোগ পুলিশ তাদের কথা শুনে খুনের মামলার রুজু করেনি। যদিও জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার খবর পাওয়ার পর রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ ওই হোস্টেলে গিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং হোস্টেলের বেশ কিছু ছাত্রের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ওই ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেছিল। গোটা ঘটনাটি ভিডিওগ্রাফি করা হয়েছে। ওই আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, ময়নতদন্তকারী ডাক্তার তাঁর প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে জানিয়েছেন ওই ছাত্র আত্মহত্যা করেছে। তবে মৃত ওই ছাত্রের পরিবারের লোকেরা যদি কোনও লিখিত অভিযোগ জানায় পুলিশ সেই তদন্ত করতেও রাজি রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃত ওই ছাত্রের নাম তৌহিদ করিম(২০)। তার বাড়ি মালদা জেলায় যদুপুর গ্রামে। সে ওই কলেজে ডিপ্লোমা ফার্মেসির প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিল। মৃত ওই যুবকের বাবা রেজাউল করিম বলেন, ‘সোমবার রাতে আমার স্ত্রীর সাথে ছেলের শেষবারের মতো কথা হয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল থেকে তাকে ফোন করলেও তার ফোনটি বেজে যায়, কেউ উত্তর দেয়নি। আমরা মনে করেছিলাম ছেলে হয়ত অন্য কাজে ব্যস্ত রয়েছে সে পরে ‘রিং ব্যাক’ করবে।’
পেশায় একটি বেসরকারি সংস্থার গাড়ি চালক রেজাউল বলেন, ‘মঙ্গলবার সারাদিন পেরিয়ে গেলেও আমার ছেলে ফোনের কোনও উত্তর দেয়নি। সেদিন আমি কাজের সূত্রে আমি রঘুনাথগঞ্জে থাকায় সন্ধে নাগাদ ছেলের হোস্টেলে চলে আসি। সেখানে এসে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করাতে কলেজ কর্তৃপক্ষ আমার ছেলের খোঁজ শুরু করে। এর কিছুক্ষণ পর আমার ছেলের হোস্টেলের ঘরের ঠিক উল্টো দিকের একটি ঘর থেকে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।’
তাঁর অভিযোগ, ‘আমার ছেলে মঙ্গলবার সারাদিন নিখোঁজ ছিল। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ একবারও কোথাও তার খোঁজ করেনি। প্রায় ১২ ঘণ্টা সে ওই ঘরের মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। আমরা যখন তার দেহ উদ্ধার করি তখন দেহটি কালো হয়ে গেছিল। আমরা এই ঘটনার ন্যায্য বিচার চাইছি। সঠিক তথ্য সামনে আসুক। কে এই ঘটনা ঘটিয়েছে আমরা তা জানতে চাই।’
যদিও ওই কলেজের সভাপতি দীপক দাস বলেন, ‘ছেলেটি ভিডিও কল অন রেখে তার ‘প্রেমিকার’ সঙ্গে কথা বলতে বলতে আত্মহত্যা করেছে। দেহ উদ্ধারের দিন মৃত ওই ছাত্রের পরিবারের কোনও অভিযোগ ছিল না। এখন তারা কেন অন্যরকম কথা বলছে আমরা বুযতে পারছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার দিন ওই ছাত্র তার বন্ধুদের বলেছিল সে কোনও কাজে বাইরে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে সে এরকম করত। তাই কেউ তার খোঁজ করেনি। পরে বাড়ির লোক এসে আমাদেরকে বিষয়টি বলতে আমারও খোঁজ শুরু করি। এরপর হস্টেলের তিনতলায় একটি বন্ধ ঘরে তার দেহ উদ্ধার হয়। ওই ঘরটিতে তালা দেওয়া ছিল না।’