ভারতীয় নাগরিকদের কাছে তুমুল প্রশংসিত শহরের বাংলাদেশ ভিসা কেন্দ্র
ভারতীয় নাগরিকদের কাছে তুমুল প্রশংসিত শহরের বাংলাদেশ ভিসা কেন্দ্র
গতবছর ১৬ ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসের দিন উদ্বোধন হওয়া কলকাতার বাংলাদেশ ভিসা আবেদন কেন্দ্রটি ইতিমধ্যেই সমাজের বিভিন্ন অংশের নাগরিকদের কাছ থেকে উচ্চমানের পেশাদারী দক্ষতা এবং সহজ-সরল ভিসা আবেদনের পদ্ধতির জন্য উচ্ছ্বসিত প্রশংসা লাভ করেছে।
খুব বেশিদিন আগের কথা নয়, যখন ভিসা আবেদনকারীদের একাধিক লম্বা লাইন কলকাতার বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনের দৈনন্দিন পরিচিত দৃশ্য ছিল। কিন্তু কলকাতার নতুন ভিসা প্রসেসিং সেন্টার এর কল্যাণে সেই দীর্ঘ লাইনের ছবি এখন শুধুই ইতিহাস। আগের বাংলাদেশ হাইকমিশনের বাইরে আবেদনকারীদের দীর্ঘ ক্লান্তিকর অপেক্ষার ছবি এখন বদলে গিয়েছে অত্যন্ত আরামদায়ক এক অভিজ্ঞতায়,যার প্রশংসায় এখনও সোশ্যাল মিডিয়া উপচে পড়ছে।
বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনারের কলকাতা অফিসে প্রতিবছর সর্বাধিক সংখ্যক ভিসার আবেদন জমা পড়ে। তারা ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়াটি দেখাশোনার দায়িত্ব এবার সল্টলেকের তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রের একটি বেসরকারি এজেন্সির হাতে তুলে দিয়েছে। এই অত্যাধুনিক ভিসা আবেদন কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া এবং সেনজেন দেশগুলির শ্রেণীতে যুক্ত হলো যাদের কলকাতায় অনুরূপ ভিসা আবেদন কেন্দ্র রয়েছে।
মিতুল গুপ্ত বলেন,”এটি কলকাতার অন্যতম সেরা ভিসা কেন্দ্র। অত্যন্ত সুলভ এ এখানে সেরা পরিষেবা পাওয়া যায়।”
সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন পোস্টে এই ভিসা আবেদন কেন্দ্রের পেশাদারিত্ব, সময়ানুবর্তিতা এবং কর্মীদের আন্তরিক ব্যবহারের মত বিষয়গুলি প্রশংসিত হচ্ছে। রাজিব তিওয়ারি তাঁর একটি রিভিউ পোস্টে লিখেছেন, “আমার অভিজ্ঞতা সত্যি খুব ভালো, বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করেছে, তাদের পরিষেবা অত্যন্ত নিয়মানুবর্তী।”
যদিও এই পরিষেবার জন্য জিএসটি সহ ৬৯৯ টাকা খরচ করতে হয়। কিন্তু তা সত্বেও সময় এবং ঝঞ্ঝাটমুক্ত পরিষেবা লাভের সুযোগ পাওয়া আবেদনকারীরা নিজেদের সব রকম প্রশ্নের সন্তোষজনক জবাব পাওয়ার বিনিময়ে এটুকু খরচ গায়ে মাখছেন না। গৌতম সিং লিখেছেন,”মনোরম পরিবেশ এবং খুব শান্ত, সুশৃংখল আবহাওয়া। এখানকার কর্মীরাও তাদের দক্ষ পরিষেবার মাধ্যমে আপনাকে ক্লান্ত হওয়ার সুযোগ দেন না।”
মণিন্দ্র সিং তাঁর পোস্টে লিখেছেন, “এখানকার ওয়েটিং এরিয়া থেকে আপনি টুকটাক ভাজাভুজি কিনে খেতে পারেন। সমস্ত কেন্দ্রটি বাতানুকূল। এখানকার পরিষেবা অত্যন্ত আরামদায়ক এবং উন্নত মানের।”
সার্কাস এভিনিউতে নিজেদের দফতর ভিড় মুক্ত করতে
সেই ১৯৭১ সাল থেকে ভিসা প্রদানকারী বাংলাদেশ উপহাইকমিশনার এই প্রথম বিদেশের মাটিতে তৃতীয় সংস্থার হাতে নিজেদের ভিসা আবেদন নিষ্পত্তির দায়িত্ব তুলে দিল।১৩ হাজার বর্গফুটের ঝাঁ চকচকে নতুন বাংলাদেশ ভিসা কেন্দ্র সম্পর্কে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করতে গিয়ে নবীন তান্বানি বলেন,”এই আবেদন কেন্দ্র টি সত্যিই অত্যন্ত কার্যকরী। এরা গুছিয়ে এবং দ্রুত গতিতে কাজ করে। সমস্ত বিষয় প্রাঞ্জলভাবে বুঝিয়ে দেয়।”
১৩ হাজার বর্গফুটের এই বিশাল আবেদন কেন্দ্রে ৩০০ লোকের অপেক্ষার জায়গা আছে, একই সঙ্গে রয়েছে বিশ্রাম কক্ষ, প্রার্থনা কক্ষ, ক্যাফেটেরিয়া এবং ভিসা আবেদনকারীদের সহায়তার জন্য একটি ডিজিটাল সহায়তা কেন্দ্র।
সোনু শর্মা বলেন, “এখানকার কর্মীরা সকলেই অত্যন্ত উপকারী মানসিকতার। তারা প্রত্যেকের সমস্যাই মন দিয়ে শোনেন এবং সহানুভূতির সঙ্গে দ্রুত সমাধান করেন।”
স্বাতী দোকানিরা বলেন, “এখানকার কর্মীরা অত্যন্ত নম্র এবং বিনয়ী।এখানকার পরিবেশ খুব সুন্দর এবং অকৃত্রিম।”এই ভিসা আবেদন কেন্দ্র সকাল ন’টা থেকে দুপুর তিনটে পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ করা হয় এবং দুপুর একটা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত ভিসা প্রদান করা হয়। এই ভিসা আবেদন কেন্দ্রের ইতিবাচক দিকের প্রশংসা শোনা গিয়েছে অনেকের কন্ঠে। অনুজ কুমার বলেন,”এখানকার অন্দরসজ্জা খুবই সুন্দর।এখানে আমার অভিজ্ঞতা খুবই ভালো।আমি যথা সময়ে নিজের ভিসা হাতে পেয়েছি এবং এখানকার কর্মীরা আমার সমস্ত প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিয়েছেন।”