পুর প্রশাসক মণ্ডলীতে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নয়, নবান্নকে নির্দেশ দিল নির্বাচন কমিশন
দীর্ঘদিন ধরে সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা। এবার প্রথম দফা ভোটের মুখে নির্বাচন কমিশন নির্দেশ দিল, পুর প্রশাসক মণ্ডলীতে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের রাখা যাবে না। পুরসভার কাজকর্ম সামলানোর জন্য রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের প্রশাসক মণ্ডলীতে রাখতে হবে। অবিলম্বে সেই রদবদল করে আগামী ২২ মার্চ সকাল ১০ টার মধ্যে সেই বিষয়ে নবান্নকে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
গত এপ্রিল থেকে রাজ্যের ১১২ টি পুরসভায় ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে যাবতীয় নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হয়। তার জেরে কলকাতা পুরনিগম, বিধাননগর পুরনিগম-সহ রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। বছর দুয়েক আগে আরও কয়েকটি পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। সেই পরিস্থিতিতে পুরসভাগুলিতে প্রশাসক বসানো হয়। সাধারণত যিনি পুরপ্রধান ছিলেন, তাঁদের সাধারণত পুরসভার প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে বসানো হয়। কলকাতার প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে ফিরহাদ হাকিমকে বসানো নিয়ে মামলা কলকাতা হাইকোর্টেও গড়িয়েছিল। বিজেপির দায়ের করা মামলা অবশ্য খারিজ হয়ে গিয়েছিল। তা সত্ত্বেও বিজেপি-সহ বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, পুর নির্বাচনের হারের ভয়ে নির্বাচন করছে না রাজ্য সরকার।
তারইমধ্যে শনিবার কমিশনের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়, যতদিন আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর থাকছে, ততদিন পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীতে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের রাখা যাবে না। সংবিধানের ৩২৪ ধারা আওতায় কমিশনের হাতে যে ক্ষমতা আছে, তা প্রয়োগ করেই সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কমিশনের নির্দেশ, মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব একটি কমিটি গঠন করে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া ওই পুরসভাগুলির প্রশাসক মণ্ডলীতে সরকারি আধিকারিকদের নিয়োগ করতে হবে। কমিটিতে থাকবেন পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি এবং কর্মীবর্গ দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিও।
কী কারণে সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাও স্পষ্টভাবে জানিয়েছে কমিশন? বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পুর প্রশাসক মণ্ডলীতে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা থাকলে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে ভোটারদের প্রশ্ন উঠতে পারে।
যদিও বিষয়টি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছে রাজ্যের শাসকদল। তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানান, আশা করছি যে বিজেপি বা কোনও কোনও রাজনৈতিক দলের সুবিধা করে দেওয়ার কমিশন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রশাসক নিয়োগ করতে হয়েছিল। সেটা শুধু তৃণমূল নন, অন্য দলের পুরসভার ক্ষেত্রেও যে দলের দখলে ছিল, তাদেরই প্রশাসক পদে বসানো হয়েছিল। এবার পুর পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে। বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি।