রবিবার রাজ্যের তিন আসনের উপনির্বাচনের ফলাফল বের হবে। তবে নজরের সব আলো কেড়ে নিয়েছে অবশ্যই ভবানীপুর কেন্দ্র।
রবিবার রাজ্যের তিন আসনের উপনির্বাচনের ফলাফল বের হবে। তবে নজরের সব আলো কেড়ে নিয়েছে অবশ্যই ভবানীপুর কেন্দ্র। এই কেন্দ্রে এবার তৃণমূল প্রার্থী খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। ২১শের মহারণে তিনি নন্দীগ্রাম আসন থেকে পরাজিত হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারীর কাছে। এরপরে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসেন তিনি। কিন্তু নিয়ম মেনে ভবানীপুর আসন থেকে দাঁড়াতে হয়েছে তাঁকে। তাঁর বিপক্ষে বিজেপি প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল। আর কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। এরপরই কঠিন লড়াইয়ের শেষে কে শেষ হাসি হাসল তা পরিষ্কার হয়ে যাবে। এদিকে এবার ভবানীপুর আসনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘরের মেয়ে হিসাবে তুলে ধরেছিল তৃণমূল। ঘাসফুল শিবিরের দাবি ভবানীপুরের মানুষ দুহাত তুলে আশীর্বাদ করেছেন তৃণমূল নেত্রীকে। অন্তত ৫০ হাজার ভোটে এগিয়ে থাকবেন তিনি। এমনটাই আশা করছে তৃণমূল শিবির। এবার একবার দেখে নেওয়া যাক কোন কেন্দ্রে কত ভোট পড়েছিল। কমিশনের হিসাবে, ভবানীপুরে ভোট পড়েছিল ৫৭.০৯ শতাংশ। সামসেরগঞ্জে ভোট দানের হার ছিল ৭৯.৯২ শতাংশ ও জঙ্গিপুরে ভোট শতাংশ ছিল ৭৭.৬৩ শতাংশ। তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে ভবানীপুর আসনে ভোট দানের হার কিছুটা কম থাকায় দোলাচলে রয়েছে শাসক ও বিরোধী উভয় শিবিরের একাংশ। তবে ইতিমধ্যেই বিজেপি প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল স্পষ্টতই জানিয়ে দিয়েছেন, গণনাকেন্দ্র থেকে যেন কোনওভাবেই কর্মীরা বেরিয়ে না যান। তবে তৃণমূলের একাংশের দাবি উপনির্বাচনে সাধারণত ভোটের হার কিছুটা কমই থাকে। ভবানীপুরে যে ভোট পড়েছে তা নিয়ে উদ্বেগের কিছুই নেই।এদিকে সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ভোট দানের হারের উপর নির্ভর করে ওয়ার্ড ভিত্তিক একটি আভ্যন্তরীন রিপোর্ট তৈরি করেছে তৃণমূল শিবির। তাতে দেখা যাচ্ছে সবথেকে বেশি ভোট পড়েছে ৮২ নম্বর ওয়ার্ডে। এখানে প্রায় ৬৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। অন্যদিকে সবথেকে কম ভোট পড়েছে ৬৩ নম্বর ওয়ার্ডে। সেখানে ভোট দানের হার মাত্র ৪৩ শতাংশ। এনিয়ে পরবর্তী সময় পর্যালোচনা করবে শাসকদল। তবে দলের একাংশের মতে, পরপর একাধিক নির্বাচনে ভবানীপুর ফেরায়নি তৃণমূলকে। খুব কম করে হলেও বিরোধীদের সঙ্গে ২৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে থেকেছে তৃণমূল। সেই ধারা এবার অনেকটাই ছাপিয়ে যেতে পারে। ২০১১ সালে বাংলার মসনদে যখন প্রথমবার বসেছিল তৃণমূল তখন এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত বক্সি ৪৯ হাজার ৯৩৬ ভোটে হারিয়ে দিয়েছিলেন বাম প্রার্থীকে। এরপর থেকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তৃণমূলকে। উপনির্বাচনে দাঁড়িয়েই মমতা সেবার ৫৪ হাজার ২১৩ ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। ২০১৬ সালে ২৫ হাজার ৩০১ ভোটে জোট প্রার্থী দীপা দাসমুন্সিকে হারিয়ে দিয়েছিলেন মমতা। ২০২১ সালের মহারণে প্রায় ২৮ হাজার ভোটে বিজেপি প্রার্থীকে পরাস্ত করে তৃণমূল। আর এবারের উপনির্বাচনে প্রার্থী খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের দাবি গতবারের তুলনায় দ্বিগুণ ভোটে জিততে পারেন মমতা। আর এখান থেকে জিতেই গোটা দেশকে বার্তা দেবেন মমতা। এদিকে কমিশন সূত্রে খবর, ভবানীপুরের শাখাওয়াত মেমোরিয়াল স্কুলে ২১ রাউন্ড গণনা হবে। ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হচ্ছে গণনাকেন্দ্র। প্রথম বলয়ে স্থানীয় পুলিশ। দ্বিতীয় বলয়ে রাজ্য পুলিশ। তৃতীয় বলয়ে গণনাকেন্দ্রের বাইরে ২৪জন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। ২০০ মিটারের মধ্যে থাকবে ১৪৪ ধারা। জঙ্গিপুরে ২৬ রাউন্ড ও সামসেরগঞ্জে ২৪ রাউন্ড গণনা হবে।