শীর্ষ আদালত মেডিক্যাল ভরতি দুর্নীতি মামলায় সব পক্ষকে হলফনামা জমা দিতে বলেছে।
আজকে শীর্ষ আদালত মেডিক্যাল ভরতি দুর্নীতি মামলায় জড়িত সব পক্ষকে তিন সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দিতে বলেছে। এদিকে দুই বেঞ্চের সংঘাত প্রসঙ্গে শীর্ষ আদালত পর্যবেক্ষণে বলে, সিঙ্গল এবং ডিভিশন বেঞ্চ নিয়ে যা হচ্ছে তা ঠিক নয়। আমরা এই নিয়ে কিছু বললে তাতে হাই কোর্টের গরিমা ক্ষুণ্ণ হবে।
কলকাতা হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ বনাম ডিভিশন বেঞ্চের সংঘাতের জেরে মেডিক্যাল ভরতি সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলা সরিয়ে দেওয়া হল কলকাতা হাই কোর্ট থেকে। এখন মামলাটি সরাসরি সুপ্রিম কোর্ট দেখবে বলে আজ নির্দেশ দিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিচারপতি সৌমেন সেনের মধ্যে মূলত এই মামলা ঘিরেই সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এই আবহে আজকে শীর্ষ আদালত মেডিক্যাল ভরতি দুর্নীতি মামলায় জড়িত সব পক্ষকে তিন সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দিতে বলেছে। এদিকে দুই বেঞ্চের সংঘাত প্রসঙ্গে শীর্ষ আদালত পর্যবেক্ষণে বলে, সিঙ্গল এবং ডিভিশন বেঞ্চ নিয়ে যা হচ্ছে তা ঠিক নয়। আমরা এই নিয়ে কিছু বললে তাতে হাই কোর্টের গরিমা ক্ষুণ্ণ হবে। তাই অন্য ভাবে এই সংঘাতের সমাধান সূত্র বের করব আমরা।
উল্লেখ্য, মেডিক্যাল কলেজে ভরতির অনিয়ম মামলায় বুধবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। এই নির্দেশের ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাজ্য। তখন বিচারপতি সৌমেন সেন বিচরপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের উপর মৌখিক স্থগিতাদেশ দেন। এই মামলাটি বুধবার বিকেলে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চে ওঠে ফের একবার। তখন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ডিভিশন বেঞ্চের মৌখিক স্থগিতাদেশের কথা জানতে পারেন। তখন তিনি জানান, স্থগিতাদেশের লিখিত প্রমাণপত্র না পেলে তা মানা হবে না। সিবিআইকে তদন্ত শুরু করত নির্দেশ দেন তিনি।
এরপরই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় মন্তব্য করেছিলেন, ‘কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে কি বাঁচানোর চেষ্টা করছেন বিচারপতি সেন? নইলে রায়ের কপি না দেখে কী করে আমার রায়ে স্থগিতাদেশ দিলেন তিনি? যে কেউ তাঁর এজলাসে গিয়ে এই আবদার করলে তিনি মানবেন তো? একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করছেন তিনি। কেন তাঁর ইমপিচমেন্টের প্রক্রিয়া শুরু হবে না?’
এদিকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর নির্দেশনামায় লেখেন, বড়দিনের ছুটির আগে শেষ যে দিন আদালতের কাজ হয়, সেদিন বিচারপতি অমৃতা সিনহাকে হাইকোর্টে নিজের চেম্বারে ডেকে পাঠিয়েছিলেন জাস্টিস সেন। বিচরপতি সিনহাকে তিনি রাজনৈতিক নেতার মতো নির্দেশ দিয়ে বলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটা রাজনৈতিক ভবিষ্যত রয়েছে। তাই তাঁকে বিরক্ত করা যাবে না। বিচারপতি সিনহার বেঞ্চের লাইভ স্ট্রিমিং বন্ধ করতে হবে। এছাড়া বিচারপতি সিনহার বেঞ্চে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত ২টি মামলা খারিজ করতে বলেন তিনি।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য এবং নির্দেশনামায় এই সব দাবির বিষয়ে বিচারপতি সৌমেন সেনকে জানান পশ্চিনঙ্গের এজি কিশোর দত্ত। এই আবহে বিষয়টি প্রধান বিচারপতিকে জানানোর নির্দেশ দেন বিচারপতি সেন। ওদিকে নিজের নির্দেশনামায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিচারপতি সেনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে জানিয়েছেন তিনি। সেই কথা সুপ্রিম কোর্টের কানেও গিয়েছে।