জিএসটি-র ক্ষতিপূরণে রাজ্যগুলির সামনে দুটি বিকল্প জানাল কেন্দ্র
অতিমারির কবলে পড়ে দেশের অর্থনীতি টলমল করছে। জোর ধাক্কা খেয়েছে রাজ্যগুলির গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স (জিএসটি) আদায়ে। এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়াচ্ছিল রাজ্যগুলি। এই অবস্থায় জিএসটি কাউন্সিল কী দিশা দেখায় সে দিকেই তাকিয়ে ছিল দেশের সব রাজ্য। আজকের বৈঠকে রাজ্যগুলির আর্থিক ঘাটতি মেটানোর জন্য দুটি উপায় বাতলেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সিদ্ধান্ত ও ভাবনার জন্য রাজ্যগুলিকে ৭ দিন সময়ও দেওয়া হয়েছে।
এ দিন জিএসটি কাউন্সিলের ৪১ তম বৈঠকে নির্মলা বলেন, ‘‘এ বছর আমরা অভূতপূর্ব পরিস্থিতির মুখোমুখি, আমরা মন্দাও দেখতে পারি।’’ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনার এবং লকডাউনের জেরে ২০২০-২১ আর্থিক বছরে রাজ্যগুলির জিএসটি আদায়ে ঘাটতি পৌঁছতে পারে ২.৩৫ লক্ষ কোটি টাকায়।ইতিমধ্যেই আর্থিক টানাটানির মধ্যে পড়েছে রাজ্যগুলি। যেমন পঞ্জাব জানিয়েছে, তাদের ২৫ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি রয়েছে। ২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে লাগু হয় জিএসটি। ওই আইন মোতাবেক, ৫ বছরের জন্য রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা কেন্দ্রীয় সরকারের। এই বিষয়টিকে সামনে রেখেই জিএসটি ঘাটতি মেটানোর জন্য কেন্দ্রের উপর লাগাতার চাপ বাড়াচ্ছিল রাজ্যগুলি।
অবশ্য এ দিন কেন্দ্র জানিয়ে দিয়েছে, সরকারি কোনও তহবিল থেকে রাজ্যগুলির এই জিএসটি ক্ষতিপূরণ মেটানো হবে না। তার বদলে বিকল্প উপায়ের কথা বলা হয়েছে। কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমান অর্থ বছরে রাজ্যগুলির জিএসটি ক্ষতিপূরণের অঙ্ক মোট ৩ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছে যেতে পারে। এর মধ্যে ৬৫ হাজার কোটি টাকা সেস বাবদ আদায় করা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে, রাজ্যগুলির ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রাপ্য হচ্ছে মোট ২.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৯৭ হাজার কোটি টাকা জিএসটি বাবদ ঘাটতি। বাকি টাকা বকেয়ার জন্য দায়ী অর্থনীতিতে করোনার প্রভাব। এ দিন ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে ৫ ঘণ্টার বৈঠকে এই তথ্য তুলে ধরেছেন রাজস্ব সচিব অজয় ভূষণ পাণ্ডে।
রাজ্যগুলির ক্ষতিপূরণ পুষিয়ে দিতে কেন্দ্রের তরফে দুটি বিকল্প দেওয়া হয়েছে। রাজস্ব সচিব প্রস্তাব দেন, রাজ্যগুলিকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার তরফে একটি স্পেশাল উইন্ডোর মাধ্যমে ওই ঘাটতি পূরণের ব্যবস্থা করা হবে। প্রথম বিকল্প হল, রাজ্যগুলিকে সঙ্গত হারে ৫ বছরের জন্য ৯৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। দ্বিতীয়ত, ওই স্পেশাল উইন্ডোর মাধ্যমে মোট ২.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার সুযোগ মিলবে। এ নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে। তবে এই ব্যবস্থা শুধুমাত্র চলতি আর্থিক বছরের জন্য।