ব্যর্থ হোল পিকে-র কাঁথি সফর
রাজ্য রাজনীতিতে এই মুহূর্তে অন্যতম আলচিত নাম হল শুভেন্দু অধিকারী। যাকে তৃণমূলে ধরে রাখতে কাঁথিতে তাঁর বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর ওরফে পিকে। তৃণমূলের এই পরামর্শদাতার উদ্যোগ সফল হয়নি। তা প্রায় স্পষ্ট করে দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের দাপুটে নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
গত কয়েক মাস ধরে তৃণমূলের দাপুটে নেতা শুভেন্দুর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জল্পনা চলছে। দল এবং দলনেত্রীকে এড়িয়ে নানাবিধ কর্মসূচী করে চলেছেন শুভেন্দু। তাঁর অনুগামীরাও এখন আর নিজেদেরকে তৃণমূলের কর্মী বলে পরিচয় দিচ্ছেন না। শুভেন্দু অনুগামীদের নয়া পরিচয় হচ্ছে, “দাদার অনুগামী।” পূর্ব মেদিনীপুর থেকে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও বিস্তারলাভ করেছে এই অনুগামীরা।
স্বাভাবিকভাবেই যা নিয়ে প্রবল প্রতিকূলতার মধ্যে রয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। নাম উল্লেখ না করে শুভেন্দুকে আক্রমণ করেছেন অনেক নেতা। পালটা জবাব দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। এই অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে বৃহস্পতিবার কাঁথিতে অধিকারী পরিবারের বাড়িতে গিয়েছিলেন ভোট কূশলী প্রশান্ত কিশোর। সেখানে শিশির অধিকারীর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। শুভেন্দু অধিকারী বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে সূত্র মারফত।
গুঞ্জন ছড়িয়েছে যে ঘাস ছেড়ে পদ্ম ফুল হাতে নিয়ে নিতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী। এই নিয়ে সরাসরি বিজেপির কোনও নেতা কিছু বলেননি। তৃণমূলের নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। যা নিয়েই শুক্রবার মুখে খুলেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা খড়গপুএর সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেছেন, “শুভেন্দু বড় নেতা উনি কি করবেন ওনার ব্যাপার। তৃণমূল পার্টিতে যা চলছে বাংলার মানুষ হতাশ।”
শুভেন্দুর অভিমান ভাঙাতে নেত্রী মমতা বা দলের অন্য কোনও নেতার জায়গায় প্রশান্ত কিশোরের কাঁথি যাওয়াকে কটাক্ষ করেছেন দিলীপবাবু। তিনি বলেছেন, “তৃণমূলের পিকে এখন ড্যামেজ কন্টোল হয়েছে। তৃণমূল পাটির উপর কর্মীদের বিশ্বাস নেই। পিকে অন্য পাটি থেকে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে তৃণমূলে আনার চেষ্টা করছে।” সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, এখন তৃণমূল ছেড়ে কর্মীরা চলে আসছে। ফলে আর কোনও সুস্থ মানুষ তৃণমূলে থাকবে না, যাবেও না।”
যদিও সেই বৈঠকে বরফ গলেনি। যার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে শুক্রবার। এদিন নন্দীগ্রামের এক অনুষ্ঠানে এসে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন শুভেন্দু অধিকারী। যেখানে তৃণমূলের শীর্ষনেতাদের বিরুদ্ধে তাঁর বিদ্বেষ স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এদিন নন্দীগ্রামে কালীপুজো উদ্বোধনে তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের পর নন্দীগ্রামে কেউ আসেনি। আমিই বারবার ছুটে এসেছি, পাশে থেকেছি।’